বাংলাদেশের শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার ‘পি এস মাহসুদ’ প্রয়োজনীয় মেরামত শেষে প্রমোদতরী হিসেবে পুনরায় চালুর সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১২ নভেম্বর ২০২৫) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘যমুনা’য় নৌ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন প্রধান উপদেষ্টাকে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নূরুন্নাহার চৌধুরী ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান মো. সলিম উল্লাহ। প্রধান উপদেষ্টার বার্তা প্রফেসর ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় নৌকার ডিজাইন সারা বিশ্বে বিখ্যাত। বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই এসব ঐতিহ্য সম্পর্কে অবগত নয়। আমাদের ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। প্যাডেল স্টিমারসহ সব পুরোনো নৌযান সংরক্ষণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।” কী থাকছে প্রমোদতরীতে বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তাদের আশা, ‘পি এস মাহসুদ’ চালু হলে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে এটি বড় আকর্ষণ হবে। বিদেশি অতিথিদের জন্য থাকবে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার, বাংলা গানের আসর ও নানাবর্ণের সাংস্কৃতিক আয়োজন। সপ্তাহে সাতদিন সার্ভিস চলবে—৫ ঘণ্টার দীর্ঘ ভ্রমণের পাশাপাশি ২–৩ ঘণ্টার শর্ট ট্রিপও থাকবে বলে জানানো হয়েছে। ঐতিহ্য সংরক্ষণে জোর প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দেন, ভ্রমণকারীরা যেন নৌ-ঐতিহ্যের ইতিহাস জানতে পারেন। কত বছরের স্টিমার, নামের পেছনের গল্প, অতীতের ভাড়া, নদীপথের স্মৃতি—সবই সৃজনশীলভাবে উপস্থাপনের পরামর্শ দেন তিনি। নৌ উপদেষ্টার মন্তব্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “পি এস মাহসুদ কেবল নৌযান নয়, এটি আমাদের নদীজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক। নতুন প্রজন্ম যেন কাছ থেকে দেখে বুঝতে পারে—একসময় নদীপথই ছিল যোগাযোগ ও সংস্কৃতির প্রাণ।” তিনি আরও জানান, ‘পি এস অস্ট্রিচ’ ও ‘পি এস লেপচা’সহ অন্যান্য পুরোনো স্টিমারও ধাপে ধাপে সংস্কার হবে। চট্টগ্রামের কাপ্তাই লেকেও একটি স্টিমার প্রমোদতরী চালুর প্রাথমিক ভাবনা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ যাত্রা তরুণদের কাছে ঐতিহ্য পৌঁছে দিতে বিশেষ দিনগুলোতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘এডুকেশনাল ট্রিপ’ আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কেন এটি বড় খবর শতবর্ষী ঐতিহ্য নতুন আঙ্গিকে ফিরে আসছে—টেকসই ট্যুরিজমের নতুন সম্ভাবনা। নদীভিত্তিক পর্যটনে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং জোরদার হবে। সংরক্ষণ, সংস্কৃতি ও বিনোদন—এক প্ল্যাটফর্মে মিলবে অভিজ্ঞতা।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: