মুহাম্মদ ইউনূসের ঐতিহাসিক ঘোষণা! নারীর অংশগ্রহণে নতুন বাংলাদেশ গড়ার ওপর জোর; মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে রাখলেন 'নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়'! পুরো রিপোর্ট পড়
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বেগম রোকেয়া দিবসের বক্তব্য: নারীর নেতৃত্বে অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ গড়ার গুরুত্ব ও 'নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়' ঘোষণা
পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট (অধিকারপত্র ডটকম শৈলী)
ঢাকা: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করে অভ্যুত্থান-পরবর্তী 'নতুন বাংলাদেশ' গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বিশেষভাবে বেগম রোকেয়ার নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের চেতনাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করার কথা বলেন। একইসঙ্গে, অনুষ্ঠানে তিনি একটি যুগান্তকারী ঘোষণা দিয়েছেন— 'মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়'-এর নাম পরিবর্তন করে এখন থেকে হবে 'নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়'।
আজ মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর, ২০২৫) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৫ উদযাপন ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আজকের নারীসমাজ গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী নারী সমাজ। একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন নারী সমাজ। তাঁদের হাত ধরেই নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছে। তাঁরা কেবল নারীদের জন্য নয়, সকলের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক। নারীদের সামনে রেখেই আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠুক। তাঁদেরকে আমাদের সমুন্নত রাখতে হবে।”
চার বিশিষ্ট নারীকে রোকেয়া পদক প্রদান
প্রতি বছরের মতো এবারও নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, মানবাধিকার এবং নারী জাগরণে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চার বিশিষ্ট নারীকে রোকেয়া পদক প্রদান করা হয়েছে:
* নারীশিক্ষা (গবেষণা): রুভানা রাকিব
* নারী অধিকার (শ্রম অধিকার): কল্পনা আক্তার
* নারী জাগরণ (ক্রীড়া): ঋতুপর্ণা চাকমা
* মানবাধিকার: নাবিলা ইদ্রিস
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই পদক বিজয়ীরা রোকেয়ার দেখানো পথে জাতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছেন এবং তাঁরা শুধু বাংলাদেশের নন, সারা পৃথিবীর নেতৃত্ব দেওয়া নারী।
একশ বছরেও কেন 'আরেকজন রোকেয়া' সৃষ্টি হয়নি?
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে আক্ষেপ করে বলেন, "আমরা ১০০ বছর পার হলেও আরেকজন রোকেয়া সৃষ্টি করতে পারিনি। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।" তিনি উল্লেখ করেন, রোকেয়ার স্বপ্ন ও দিকনির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও সমাজ তা আমলে আনতে পারেনি।
তিনি ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ ও গ্রামীণ ব্যাংকের শুরুর দিকের স্মৃতিচারণ করে বলেন, কীভাবে নারীরা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল এবং তাদের নিজস্ব নাম পর্যন্ত ছিল না। এই অবস্থার সঙ্গে একশ বছর আগে রোকেয়ার বিপ্লবাত্মক চিন্তাভাবনার তুলনা টেনে তিনি বলেন, "রোকেয়া বিপ্লবী কথা বলেছে। সমাজকে ঝাঁকুনি দিয়ে কথা বলেছে। কিন্তু সেই ঝাঁকুনি বহন করে নিয়ে যাওয়ার মতো ব্যক্তি আর এলো না। এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য।"
তিনি আরও বলেন, বেগম রোকেয়া সমাজকে বাদ দিয়ে কোনো কাজ করেননি এবং তিনি নারী-কন্যাদের লেখাপড়া শিখিয়ে অন্ন উপার্জনের কথা বলেছেন। এই শিক্ষা বর্তমান সমাজ গ্রহণ করতে পারছে না বলেও তিনি মনে করেন।
শিক্ষায় নারীদের আবাসন সংকট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান চিত্র তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস জানান, সেখানে ছেলে-মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় অর্ধেক-অর্ধেক। অথচ মেয়েদের জন্য হল রয়েছে মাত্র ৫টি এবং ছেলেদের হল ১৩টি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, "এটা কেমন বিচার হলো? মেয়েদের থাকার ব্যবস্থা তো আগে করতে হবে।"
অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ সভাপতিত্ব করেন এবং সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
হ্যাশট্যাগ: #MuhammadYunus #BegumRokeyaDay #NewBangladesh #নারীঅধিকার #প্রধানউপদেষ্টা #রোকেয়াপদক #নারীওশিশু #AdhikarpatraExclusive #গণঅভ্যুত্থান
কিওয়ার্ডস: অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, বেগম রোকেয়া দিবস, রোকেয়া পদক ২০২৫, নারী অধিকার, নতুন বাংলাদেশ, অভ্যুত্থান-পরবর্তী, নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়, ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন, রুভানা রাকিব, কল্পনা আক্তার, ঋতুপর্ণা চাকমা, নাবিলা ইদ্রিস।
আপনার কি এই প্রতিবেদনের কোনো নির্দিষ্ট অংশ সম্পর্কে অতিরিক্ত তথ্য বা ব্যাখ্যা প্রয়োজন?

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: