11/05/2025 তবু ৪৭৫ টাকায় নামল না মাংসের দাম
Admin 1
১০ June ২০১৭ ১২:৫৪
উদ্যোগ-ঘোষণা এল। ঝোলানো হলো মূল্যতালিকা। চলল ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। তবু সিটি করপোরেশন নির্ধারিত ৪৭৫ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করছেন না মাংস ব্যবসায়ীরা। কোথাও ৪৮০ টাকা, কোথাও ৪৯০ টাকায় কেজি দরে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই মূল্য ৫০০ টাকার বেশি উঠে যায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোজার শেষ দিকে বেড়ে গিয়ে ৬০০ টাকায়ও ঠেকতে পারে।
মাংস ব্যবসায়ীরা জানান, তাঁরা অপারগ। ৪৭৫ টাকায় বিক্রি করলে লোকসান গুনতে হয়। তাই বাড়তি দাম রাখা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
তবে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের কার্যক্রমের ফলে প্রথম দিকে মূল্য কিছুটা বেশি থাকলেও এখন তা কমে এসেছে।
গত ২৩ মে নগর ভবনে মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে রমজানে প্রতি কেজি দেশি গরুর মাংসের দাম ৪৭৫ টাকা বিক্রির সিদ্ধান্তের কথা জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। নতুন দর অনুযায়ী বিদেশি জাতের (বোল্ডার) প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪৪০ টাকা, মহিষের ৪৪০ ও খাসির মাংস ৭২৫ টাকায় বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ৬২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে ভেড়া ও ছাগলের মাংস। বৈঠক শেষে ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ২৬ রমজান পর্যন্ত ঢাকা মহানগর এলাকায় এ দামে মাংস বিক্রি করতে হবে। রোজার মাসে জনগণের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে এবারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। শুধু কাঁচাবাজারের মাংসের দোকান ছাড়াও ডিপার্টমেন্টাল স্টোরসহ মাংস বিক্রি করে, এমন সব দোকানকে এ দামেই মাংস বিক্রি করতে হবে।
সুপার শপগুলোয় ৪৭৫ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি হলেও কাঁচাবাজারগুলোতে বাড়তি মূল্য রাখা হচ্ছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে টাউন হল মার্কেটে শুক্রবার এক কেজি গরুর মাংসের দাম ছিল ৫২০ টাকা। ওই এলাকার বাসিন্দা শেখ নাজমুল রহমান বলেন, টাউন হল মার্কেটে ৫২০ টাকায় মাংস কিনতে হচ্ছে। পরিচিত হলে বিক্রেতারা ১০ থেকে ২০ টাকা কম রাখছেন। তবে সলিমুল্লাহ রোডের আশপাশের দোকানে ৪৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মিরপুর ১১ নম্বরে আবেদ কাল্লুর মাংসের দোকানে সিটি করপোরেশনে তালিকা টানানো রয়েছে। তালিকায় ৪৭৫ টাকা মাংসের দাম লেখা থাকলেও ৫ টাকা বেশি রেখে ৪৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে গরুর মাংস।
এর কারণ জানতে চাইলে আবেদ কাল্লু বলেন, ‘তালিকা টানাইছি। কিন্তু এতে আমাগো লস হয়। ৫ টাকা বেশি রাখছি। কাস্টমারে চাইলে দেয়। না চাইলে দেয় না। আমরা জোর করি না।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ার বলেন, সিটি করপোরেশনের বাজারগুলোতে নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রি হচ্ছে। বেশ কয়েকজন বিক্রেতা বাড়তি দামে মাংস বিক্রি করছিলেন। তবে তাঁদের জরিমানা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিটি করপোরেশন দেড় লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছে।
ডিএসসিসির অধীন নিউমার্কেট কাঁচাবাজারের নূর মোহাম্মদ স্টোরের সামনে সিটি করপোরেশনের বেঁধে দেওয়া দাম ঝোলানো। কিন্তু দাম রাখছেন ৪৮০ টাকা। পাঁচ টাকা বেশি কেন জানতে চাইলে দোকানি নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘৪৭৫ টাকায়ও বেচি। তয় মাংস পাইবেন কম, চর্বি বেশি।’ পাশের আরেক দোকানি বলেন, বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি করলে তাঁদের লাভ হয় না।
হাতিরপুল বাজারে গরুর মাংসের দাম ৪৭৫ টাকাই রাখা হচ্ছে। তবে এ বাজারের মাংস ব্যবসায়ী মোবারক হোসেনসহ আরও কয়েকজন জানান, রোজার শেষ দিকে আর এ দাম থাকবে না। বেড়ে গিয়ে ৫৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
এদিকে বেশ কয়েকজন মাংস ব্যবসায়ী জানান, রাজধানীতে প্রতিদিন পাঁচ হাজার গরুর চাহিদা রয়েছে। ঈদের উপলক্ষে এই চাহিদা ২৫ হাজারে উঠে যায়। ২৬ রমজানের পর গরুর মাংসের দাম আরেক দফা বাড়বে। তখন কেজিপ্রতি গরুর মাংসের দাম ৫৫০ টাকা কিংবা তারও বেশি হতে পারে।