04/19/2025 নুপুর শর্মা কে? যার মন্তব্যে অস্বস্তিতে ভারত
odhikarpatra
১০ জুন ২০২২ ০৩:১৩
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মুখপাত্র ছিলেন নুপুর। বিতর্কিত মন্তব্যের পর অবশ্য আপাতত সেই পদ হারিয়েছেন তিনি।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত হিন্দু কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করা নুপুর পরে আইনের ডিগ্রিও অর্জন করেন। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স থেকে আইনে স্নাতকোত্তরও করেছেন তিনি। কলেজে পড়াকালীনই রাজনীতিতে হাতেখড়ি নুপুরের। সঙ্ঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন এবিভিপির নেত্রী হিসেবে আত্মপ্রকাশ হয় তার। ২০০৮ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী হন নুপুর শর্মা।
২০০৮ সালের নভেম্বরে সংসদ হামলায় অভিযুক্ত এসএআর গিলানিকে হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। পরে অবশ্য আদালতে খালাস পেয়ে যান তিনি। সংসদ হামলায় অভিযুক্ত অধ্যাপক গিলানির মুখে থুতু ছিটিয়েছিলেন নুপুরের সঙ্গী। সেই সময়ই খবরের শিরোনামে উঠে আসেন এই নুপুর।
ওই বছরের ৬ নভেম্বর একটি আলোচনা সভায় অংশ নিয়েছিলেন এসএআর গিলানি। এবিভিপির কর্মীদের নিয়ে সভাস্থলে পৌঁছান নুপুর। শুরু হয় ভাঙচুর। নুপুরকে দেখা যায়, বিভিন্নভাবে গিলানিকে অপদস্ত করতে। সে সময় তার এক সঙ্গী গিলানির মুখে থুতু ছেটান। এরপরেই পদোন্নতি। ভারতীয় জনতা পার্টির যুব মোর্চার জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য হন নুপুর। দিল্লি বিজেপির রাজ্য কর্মসমিতির সদস্যও হন তিনি। পরে বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র হন।
২০১৫ সালে দিল্লি বিধানসভায় নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রে আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীবালের বিরুদ্ধে প্রার্থী হন নুপুর। যদিও ৩১ হাজার ৫৮৩ ভোটে কেজরীর কাছে হেরে যান তিনি। ২০১৭ সালে দিল্লি বিজেপির মুখপাত্র হন নুপুর শর্মা। বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য নুপুরের বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র, হায়দরাবাদে একাধিক মামলা হয়েছে ইতোমধ্যেই। মুম্বাই পুলিশ ওই অভিযোগের ভিত্তিতে এখনো কোনো ব্যবস্থা না নিলেও সোমবার (৬ জুন) নুপুরকে সমন জারি করে।
নুপুর-বিতর্কে চুপ দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কয়েকটি সরকারি অনুষ্ঠানে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য রেখেছেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যেখানে ভারতের ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তা নিয়ে একেবারেই ‘নীরব’ মোদি।
মুসলিম দেশগুলো ভারতের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী কেন চুপ তা নিয়ে সরব বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর কথায়, ‘ঘরে ভাঙন ধরায় বহির্বিশ্বের কাছেও দুর্বল হয়ে পড়েছে ভারত।’
প্রসঙ্গত, নুপুর শর্মা সম্প্রতি এক টেলিভিশন বিতর্কে মহনবীকে (সা.) নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। আর দলের দিল্লি শাখার মিডিয়া ইউনিটের প্রধান নবীন কুমার জিন্দাল এ বিষয়ে টুইটারে একটি পোস্ট দেন।
তাদের মন্তব্য, বিশেষ করে নুপুর শর্মার কথা ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে বেশ ক্ষুব্ধ করে। নুপুরের এক মন্তব্যের পরই উত্তরপ্রদেশের কানপুরে শুরু হয়ে যায় উত্তেজনা। প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন বহু মানুষ। যদিও নুপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দাল এরই মধ্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন। অন্যদিকে, নুপুর শর্মাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং নবীন কুমার জিন্দালকে দল থেকেই বহিষ্কার করা হয়েছে। তবুও চলছে বিতর্ক।