11/05/2025 জয়পুরহাটে আলুর দাম কমায় ক্রেতারা খুশি
odhikarpatra
২২ January ২০২৫ ২১:২০
জয়পুরহাটে জেলায় এবার আলু মৌসুমে আলুর আবাদ বেশী হয়েছে। বর্তমান সময়ে বাজারে আলু উঠতে শুরু করেছে। এ সময়ে জেলার বিভিন্ন বাজারে আলুর দাম কিছুটা কমায় সাধারণ ক্রেতারা অনেক খুশি হয়েছে। তবে আলু চাষীরা কিছুটা হলেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
জয়পুরহাট জেলার আলু গুণগত মান ভালো হওয়ায় দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। চলতি মৌসুমের প্রায় দুই মাস আগে জেলার বিভিন্ন মাঠে আগাম জাতের আলু উত্তোলন শুরু করেছে স্থানীয় কৃষকরা।
আবহাওয়ায় অনুকূলে থাকায় এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন জেলার বিভিন্ন মাঠে গেলে চোখে পড়ে শুধু আলু আর আলু। বর্তমানে বাজারে আলু ৬শ টাকা থেকে ৮শ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। আগে দাম কিছুটা বেশী থাকলেও এখন দাম কম হওয়ায় আলু চাষীরা অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। তবে খুচরা বাজারে আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে কিনতে পেরে সাধারণ ক্রেতারা অনেক খুশী। জয়পুরহাট জেলায় এবার পাকরি, ফাটা পাকরি, মিউজিকা, সাদা সেভেন, বার-তের, ক্যারেজ, রোমানা, লাল পাকরি ও কার্ডিনাল জাতের আলু আবাদ হয়েছে।
বর্তমানে এলাকার বিভিন্ন গ্রামে গেলে দেখা মিলছে এলাকার কৃষকেরা সেই আলু জমি থেকে তুলে রাস্তার পাশে বিক্রির জন্য নিয়ে আসছেন। জমির পার্শ্বে রাস্তার ধার থেকেই পাইকাররা দর-দাম করে সেই আলু ভ্যান, ভটভটি কিংবা ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে বাজারে। আর কিছুদিন পরে যখন আলু পরিপূর্ণ হবে তখন
জেলার ১৯টি হিমাগারে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা ২ লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি আলু সংরক্ষণের জন্য রাখবেন। এ ব্যাপারে একাধিক আলু চাষীরা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার আলু চাষে খরচ হয়েছে অনেক বেশী। এ বছর আলুর ফলনও বেড়েছে তবে বিক্রি করে লাভ হচ্ছে কম। গত সপ্তাহে আলু প্রতি মণ ১ হাজার থেকে ১২শ টাকায় বিক্রি করলেও এ সপ্তাহে দাম কমে ৬শ থেকে ৮শ টাকা হয়েছে। গত বছর যে লাভ করেছিলাম তা এবার আর হচ্ছে না। কোন রকমে দাম উঠছে। আলুর জমিতে চাষ, সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমসহ সব খরচ বাদ দিয়ে এবার আলুতে খুব একটা লাভ হবেনা বলে মনে করছেন তারা।
এ ব্যাপারে জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে একাধিক ক্রেতার সঙ্গে কথা বললে তারা বাসসকে জানান, আগে আলু বেশী দামে কিনলেও এখন কম দামে কিনতে পারছি। বাসায় পরিবার-পরিজন নিয়ে শান্তিমত খেতে পারছি। এটাতেই ভালো লাগছে। ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজি আলু এখন ২৫ থেকে ৩০ টাকায় পাচ্ছি। এ দাম থাকলে আমরা সাধারণ ক্রেতারা অনেক খুশি থাকবো।
এ ব্যাপারে আলু ব্যবসায়ীরা জানান, এখন বিভিন্ন জাতের আলু সরবরাহ বেশী হওয়ায় আমরা জয়পুরহাট ছাড়াও দেশের বিভিন্ন মোকামে এসব আলু সরবরাহ করছি। আমরা যেমন দামে কিনি তেমন দামে বিক্রি করি। এক্ষেত্রে আমরা কেজিতে ২৫ পয়সা থেকে ৫০ পয়সা লাভ করি। আগে বেশী দামে কিনতাম বেশী দামে বিক্রি করতাম। এখন কম দামে কিনি কম দামে বিক্রি করি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বাসসকে জানায়, চলতি মৌসুমে জয়পুরহাট জেলায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে এবার জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৪৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু রোপণ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার ৪ হাজার ৬৫০ হেক্টর বেশি জমিতে আলু রোপণ হয়েছে। এ বছর এসব জমি থেকে প্রায় ৯ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ মেঃটন আলু উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রাহেলা বেগম বাসসকে জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর ফলন ভালো হয়েছে। জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী জমিতে আলু চাষ হয়েছে। বর্তমানে আলুর উৎপাদন ও সরবরাহ বেশি হওয়ায় বাজার কিছুটা নিম্নমুখী। তবে আলুর এ দাম কিছুদিন পরে আর একটু বৃদ্ধি পাবে। জেলার বিভিন্ন হিমাগার মালিক ও কিছু পাইকারি ব্যবসায়ীরা পুরো দমে আলু কিনতে শুরু করলে আলুর দাম আর কিছুটা বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।