05/12/2025 তুরস্কে পুতিনের সঙ্গে 'ব্যক্তিগত’ সাক্ষাতের প্রস্তাব জেলেনস্কির
odhikarpatra
১২ মে ২০২৫ ১৩:৩৫
শান্তি সম্ভব কিনা তা নির্ধারণের জন্য সরাসরি আলোচনা প্রয়োজন বলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের পর রোববার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাাদিমির পুতিনের সঙ্গে তুরস্কে 'ব্যক্তিগতভাবে' দেখা করতে ইচ্ছুক।
কিয়েভ থেকে এএফপি জানায়, তবে জেলেনস্কির প্রস্তাবের তাৎক্ষণিক সাড়া দেয়নি ক্রেমলিন। শনিবার কিয়েভ ও তার মিত্রদের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি রাশিয়া প্রত্যাখ্যান করলেও তিনি সেখানে যোগ দেবেন কিনা ইউক্রেনের নেতা সে সম্পর্কে কিছু বলেননি।
২০২২ সালের মার্চ মাসে ইস্তাম্বুলে তাদের শেষ বৈঠকে, রাশিয়া ও ইউক্রেন একটি শান্তি প্রস্তাব উত্থাপন করে। প্রস্তাবটি বর্তমানে বাতিল রয়েছে ওই প্রস্তাবে কিয়েভকে নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করতে এবং ন্যাটোর যেকোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে চাপ প্রয়োগ করা হয়।
জেলেনস্কি এক্স-এ এক পোস্টে বলেন,‘কূটনীতির প্রয়োজনীয় ভিত্তি প্রদানের লক্ষ্যে আমরা আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া একটি পূর্ণাঙ্গ ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির অপেক্ষায় আছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘হত্যাকাণ্ড দীর্ঘায়িত করা অর্থহীন। আমি বৃহস্পতিবার তুরস্কে ব্যক্তিগতভাবে পুতিনের জন্য অপেক্ষা করব। আমি আশা করি এবার রাশিয়ানরা অজুহাত খুঁজবে না।’
রোববার ভোরে, পুতিন ২০২২ সালের মার্চ মাসে ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা পুনরায় শুরু করার প্রস্তাব করেন। তবে তিনি কিয়েভের মিত্রদের উত্থাপিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের কোনো সাড়া দেননি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এর আগে লিখেছিলেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে চান না, বরং রক্তপাতের সম্ভাব্য অবসানের লক্ষ্যে আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার তুরস্কে দেখা করতে চান।’
‘ইউক্রেনের অবিলম্বে এতে সম্মত হওয়া উচিত। অন্তত তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে যে কোনো চুক্তি সম্ভব কিনা এবং যদি তা না হয়, তাহলে ইউরোপীয় নেতারা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবকিছু কোথায় দাঁড়িয়ে আছে তা জানতে পারবে এবং সেই অনুযায়ী এগিয়ে যেতে পারবে!’
কিয়েভ ও তার পশ্চিমা মিত্ররা বলেছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইউরোপের সবচেয়ে খারাপ এই তিন বছরের যুদ্ধ থামানোর জন্য একটি নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিই কূটনৈতিক সমাধান এগিয়ে নেওয়ার একমাত্র উপায়।’
ট্রাম্পের সমর্থনে শনিবার কিয়েভ সফরে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও পোল্যান্ডের নেতারা সোমবার থেকে ইউক্রেনে একটি নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার জন্য রাশিয়াকে চাপ দেন।
জেলেনস্কির চিফ অফ স্টাফ আন্দ্রি ইয়েরমাক জানান, মস্কো সোমবার থেকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেই কেবল জেলেনস্কি আলোচনার টেবিলে আসবেন।
এলিসি রোববার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে বলেছে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ আলাচনার আগে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
রোববার ভোরে পুতিন তার প্রস্তাবে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব উপেক্ষা করে, ইস্তাম্বুল আলোচনায় ফিরে যাওয়ার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা কিয়েভ কর্তৃপক্ষের কাছে ২০২২ সালে ভেঙে যাওয়া আলোচনা পুনরায় শুরু করার প্রস্তাব করছি এবং কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই জোর দিয়ে বলছি।’ পুতিন বলেন, ‘আমরা ১৫ মে বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে আলোচনা শুরু করার প্রস্তাব করছি।’
এই আলোচনায় নতুন কোনো যুদ্ধবিরতিতে একমত হতে পারবেন বলেও রাশিয়ান নেতা আশা প্রকাশ করেন। তবে তিনি ইউক্রেনের পশ্চিমা সমর্থকদের ‘রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে’ চাওয়ার অভিযোগ ব্যক্ত করেছেন।
৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির নির্দিষ্ট প্রস্তাবের কথা উল্লেখ না করে তিনি ইউরোপীয় ‘আল্টিমেটাম’ এবং ‘রাশিয়া-বিরোধী বক্তব্যের’ নিন্দা করেছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান রোববার এক ফোনালাপে পুতিনকে বলেন, ‘স্থায়ী সমাধান অর্জনের লক্ষ্যে’ আঙ্কারা আলোচনার আয়োজন করতে সম্পন্ন রয়েছে।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মেয়াৎস মস্কোর ওপর যুদ্ধবিরতির ওপর গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, রাশিয়ার সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব একটি ‘ভালো লক্ষণ’ তবে তা ‘যথেষ্ট নয়’।