শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির কার্যতালিকায়

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদন্ড নিশ্চিতকরণ) এবং কারাবন্দি আসামিদের আপিলের ওপর শুনানির জন্য হাইকোর্টের কার্যতালিকায় রাখা হয়েছে।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে আজকের কার্যতালিকার ২১৫ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে এ মামলা।
আদালত সূত্র জানায়, বিচারিক আদালতে কোনো মামলায় আসামির মৃত্যুদন্ড হলে সে মামলার নথি সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে হাইকোর্টে আসামির মৃত্যুদন্ড অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়, যা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পরিচিত।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জঙ্গির মৃত্যুদন্ড দিয়ে রায় দেন। এছাড়া চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয়া হয়। এ মামলার রায়সহ সকল নথি ওই বছরের ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরপর প্রধান বিচারপতির কাছে নথি উপস্থাপন করা হলে তিনি জরুরি ভিত্তিতে পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে এরই মধ্যে পেপারবুক তৈরি করা হয়। এরপর মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত শেষে আজ কার্যতালিকায় দেয়া হয় বলে জানায় আদালত সূত্র।
মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তরা হলেন- ওয়াসিম আকতার, মো. রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, মো. ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।
এছাড়া মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে। আনিসুল ওরফে আনিস, মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান এবং সরোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের দন্ড দেয়া হয়েছে।
২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছনে এ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে তদন্তে প্রকাশ পায়।
এ ঘটনায় তৎকালীন কোটালীপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন মামলা দায়ের করেন। ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। পরবর্তীকালে ২০০৯ সালের ২৯ জুন আরো নয়জনকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এরপর ২০১০ সালে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য ঢাকা-২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। সেখানে এ মামলার বিচার সম্পন্ন হয়।