11/13/2025 শুভ জন্মদিন গল্পকথার জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ
Special Correspondent
১৩ November ২০২৫ ১৪:১৮
নিউজ ডেস্ক-
ঠিক সন্ধ্যাবেলা পুবের আকাশে যে ছোট্ট তারাটি অল্প কিছুক্ষনের জন্য নীল আলো জ্বেলে আপনিতেই নিভে যায় পৃথিবীর মানুষ সেটি তৈরি করেছেন ফিহার(হুমায়ূন আহমেদ) স্মরনে। সেই কৃত্রিম উপগ্রহটির সিলঝিন নির্মিত কক্ষে পরমযত্মে রাখা হয়েছে ফিহার (হুমায়ূন আহমেদ) প্রানহীন দেহ। সে সব কতকাল আগের কথা। আজও সে উপগ্রহটি ঘুরে বেড়াচ্ছে পৃথিবীর চারিদেকে। হিসেব মত জ্বলে উঠছে মায়াবী নীল আলো। পৃথিবীর মানুষ যেন বলছে, ফিহা(হুমায়ূন আহমেদ) তোমাকে আমরা ভুলিনি, আমাদের সমস্ত ভালোবাসা তোমাদের জন্য। ভালোবাসার নীল আলো সেই জন্যেই তো জ্বেলে রেখেছি...(তোমাদের জন্যে ভালোবাসা/ হুমায়ূন আহমেদ)। আজ ১৩ নভেম্বর গল্প কথার জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ এর ৭৭তম জন্মদিনের দিন। ১৯৪৮ সালের এই দিনে নেত্রকোণা জেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। শূন্য, হিমু, মিসির আলি, বাকের ভাইয়ের স্রষ্টা এই লেখক বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির এক অনন্য ধারা তৈরি করে গেছেন। যা আজও তারুণ্য ও সাধারণ মানুষের হৃদয়ে সমানভাবে বিদ্যমান। যার লেখা পড়তে পড়তে বই পড়ার অভ্যাস করা। যার লেখা বই পড়ে মাঝরাতে হাহাহা করে হেসে উঠা। হয়তো মনে আনন্দ বেদনার কাব্য চোখ জলছলছল। সত্যিই যদি বানানো যেতো তার লেখার মতো কোনো নীল তারা। জ্বেলে রাখতাম সেই ভালোবাসার আলো। আমার বাসায় সেলফে যে কয়টা বই আছে তার বেশীর ভাগই হুমায়ূন আহমেদ এর। আমাদের বাসার ছোট সদস্যগুলি কেউ না কেউ হুমায়ূন আহমেদের বই নিয়ে পড়ছে, হাসছে শব্দ করে আর দু:খ করে বলছে তাঁর লেখে তাজা নতুন কোন বই পড়ার আনন্দ নিতে পাড়ছি না। এই প্রজন্ম সত্যিই হুমায়ূন আহমেদ এর নতুন বই পড়ার আনন্দ থেকে বঞ্চিত।
হুমায়ূন আহমেদ শুধু একজন উপন্যাসিকই ছিলেন না, ছিলেন একাধারে গল্পকার, নাট্যকার, গীতিকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তার সৃষ্ট চরিত্রগুলো বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অমর হয়ে আছে। 'নন্দিত নরকে', 'মধ্যাহ্ন', 'কোথাও কেউ নেই', 'এইসব দিনরাত্রি', 'জোছনা ও জননীর গল্প'-এর মতো কালজয়ী রচনাগুলো তাকে এনে দিয়েছে অমরত্ব। তাঁর রচিত নাটক 'বহুব্রীহি', 'কোথাও কেউ নেই' এর 'বাকের ভাই' চরিত্র বা 'এইসব দিনরাত্রি' সেসময় গোটা জাতিকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিল। পরবর্তীতে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণেও সাফল্যের স্বাক্ষর রাখেন। 'শ্রাবণ মেঘের দিন', 'দুই দুয়ারী', 'শ্যামল ছায়া' ইত্যাদি চলচ্চিত্রগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশংসিত হয়। ২০০১ সালে একুশে পদক ও ১৯৯৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত এই কথাসাহিল্পী ২০১২ সালের ১৯ জুলাই নিউ ইয়র্কে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু তার সৃষ্টি আজও অম্লান। বইমেলায় তার বইয়ের চাহিদা, নাটক ও চলচ্চিত্রের পুনঃপ্রচার প্রমাণ করে হুমায়ূন আহমেদ কেবল একজন লেখক নন তিনি বাঙালির মননের এক চিরন্তন সঙ্গী।
-মো: সাইদুর রহমান (বাবু), বিশেষ প্রতিনিধি. অধিকারপত্র