11/14/2025 জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট: রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
odhikarpatra
১৩ November ২০২৫ ২৩:৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা
প্রকাশিত: ১৩-১৪ নভেম্বর ২০২৫
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক দল ও ইসলামি সংগঠনগুলো থেকে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা আইপিইউ থেকে উদ্বেগ প্রকাশিত হয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা আমাদের উদ্বেগ বিবেচনা না করে যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা আমরা সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নিতে পারছি না। জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট নেওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের দাবি জানিয়েছিলাম। কারণ নির্বাচনকালীন সময়ে রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী প্রচারণা চালাবে, ফলে জুলাই সনদের পক্ষে মতামত সংগ্রহ ঝুঁকির মুখে পড়বে। আমাদের এত রক্ত ও জীবন উৎসর্গ করা চেষ্টা বিফলে যেতে পারে।”
জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আট দল প্রধান উপদেষ্টাকে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একসাথে করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, “জুলাই জাতীয় সনদ জারির জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ। তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অপরিহার্য। প্রধান উপদেষ্টা গণভোট ও নির্বাচন একসঙ্গে হবে বলে বিভ্রান্তি তৈরি করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার যুক্তি—অর্থ সাশ্রয় ও একসাথে আয়োজনের জটিলতা—প্রয়োজনীয় বিবেচনায় যথেষ্ট নয়। জনগণ ও দলগুলোর সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি।”
খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ বলেছেন, “জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ বাস্তবায়ন আদেশ ইতিবাচক এবং জনগণের কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের প্রত্যাশা পূরণে এক ধাপ অগ্রগতি। তবে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসাথে আয়োজন করলে সনদ বাস্তবায়ন ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।”
তিনি আরও সতর্ক করেন, “নির্বাচন কমিশন সব দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে পারবে কি না, তা নিয়ে জনগণ ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংশয় রয়েছে।”
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, “এ দেশে আমরা ক্ষমতাপ্রেমিক দেখেছি, দেশপ্রেমিক দেখি নাই। আসুন, সকলে মিলে ক্ষমতাপ্রেমিকদের বাংলার মাটি থেকে বিতাড়িত করে বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শাসন দেখেছি, কিন্তু ইসলামি আদর্শের শাসন এখনও দেখিনি। ৫ আগস্টের পর দেশে ইসলামি শক্তির উত্থান হয়েছে। এটাকে কাজে লাগাতে না পারলে আমাদের জন্য মুসিবত অপেক্ষা করছে।”
ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) সাবেক সংসদ সদস্যদের গ্রেপ্তার ও আটকের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জিসিডিজি জানিয়েছে, গ্রেপ্তারদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ২৯ সেপ্টেম্বর কারা হেফাজতে মারা গেছেন। এছাড়া আটজন সংসদ সদস্য অস্থায়ী জামিনে রয়েছেন।
আইপিইউ আশা প্রকাশ করেছে, অন্তর্বর্তী সরকার এমন পদক্ষেপ নেবে যাতে আওয়ামী লীগসহ সব রাজনৈতিক দল সমানভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। সংস্থাটি আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।