11/24/2025 ই-পারিবারিক আদালত চালুর মাধ্যমে দুর্নীতি ও ভোগান্তি কমবে: আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল
odhikarpatra
২৪ November ২০২৫ ১৭:০১
স্টাফ রিপোর্টার | ঢাকা | ২৪ নভেম্বর ২০২৫
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল** বলেছেন, দেশে ডিজিটাল বিচারব্যবস্থা চালুর ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি যেমন কমবে, তেমনি দীর্ঘদিনের অভিযোগ দুর্নীতি ও সময়ক্ষেপণও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। তিনি বলেন,
“ই-পারিবারিক আদালত চালুর ফলে বিচারপ্রার্থীকে আর আগের মতো বহুবার ঘুরতে হবে না। ঘরে বসেই অনেক সেবা পাওয়া যাবে—এটাই প্রকৃত ডিজিটাল বাংলাদেশের চেতনাকে সামনে আনে।”
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনের জগন্নাথ–সোহেল স্মৃতি মিলনায়তনে **ই-পারিবারিক আদালত কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে** তিনি এ কথা বলেন। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ই-পারিবারিক আদালত তৈরিতে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে।
*ই-পারিবারিক আদালতের সুবিধা: সময়, খরচ, ভোগান্তি—সব কমবে* উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়—
* অনলাইন রেজিস্ট্রেশন * ডিজিটাল নথি ব্যবস্থাপনা * ২৪/৭ সেবা * অনলাইন শিডিউলিং * ঘরে বসে মামলা সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া এসব সুবিধার কারণে পূর্বের মতো আদালতে অতিরিক্ত ভিড়, সময়ক্ষেপণ, বারবার শুনানির তারিখ পরিবর্তন এবং কাগজপত্র হারানোর মতো সমস্যা আর থাকবে না।
বিচার ব্যবস্থায় ২১টি সংস্কার—আইনজীবীদের অংশগ্রহণ জরুরি ড. আসিফ নজরুল বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত ২১টি রিফর্ম সম্পন্ন করেছি। তবে সংস্কার টিকিয়ে রাখতে আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সবার অংশগ্রহণ জরুরি—নইলে সংস্কার স্থায়ী হয় না।
”* তিনি আরও জানান— *ই-জুডিসিয়ারি** ও *ই-রেজিস্ট্রেশন** প্রকল্পও চালুর অপেক্ষায় * লিগ্যাল এইড অফিসে এখন *একজনের জায়গায় তিনজন বিচারক
২০ জেলায় কার্যক্রম চালু, লক্ষ্য **৬৪ জেলা** তার ভাষায়, *“পুরো দেশে এ কার্যক্রম চালু হলে দেশের মোট মামলার ১/৪—অথবা ১/৩—লিগ্যাল এইডেই নিষ্পত্তি হবে। এতে আগামী পাঁচ বছরে মামলার জট কমপক্ষে ৫০ শতাংশ কমে আসবে।”
*সংস্কার রাতারাতি সম্ভব নয়: আন্তর্জাতিক উদাহরণ**
আইন উপদেষ্টা বলেন— সিঙ্গাপুরের বিচার ও প্রশাসনিক সংস্কারে ১০ বছর লেগেছিল * অতিরিক্ত সংস্কার রাষ্ট্রব্যবস্থাকে দুর্বল করতে পারে—তাই ধীরে ও বাস্তবসম্মতভাবে অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন
জনগণকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে সংস্কার চালু করতে হবে তিনি বলেন, *“নতুন সরকার এলেও সংস্কার যাতে বন্ধ না হয়—এটাই আমাদের আশা।”
“প্রযুক্তি এলেই আইনজীবীদের কাজ কমে যাবে”—এই ধারণা ভুল সংশয় দূর করে তিনি বলেন— *“প্রযুক্তি এলে মামলা কমে যাবে—এমন নয়। বরং প্রযুক্তির কারণে আইনজীবীরা আরও দ্রুত, আরও বেশি সেবা দিতে পারবেন।”
অন্যান্য বক্তাদের মন্তব্য*
*পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন—
*“এই প্রচেষ্টা আমাদের আদালত ব্যবস্থায় পেপারলেস প্রক্রিয়াকে আরও এগিয়ে নেবে। আইনজীবীদের ধন্যবাদ জানাই এটি গ্রহণ করার জন্য।
*ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব** তিনি বলেন— *“ডিজিটাল বিচারিক কার্যক্রম আইনজীবীদের কাজ দ্রুততর, স্বচ্ছ ও কার্যকর করবে।”
*অন্যান্য উপস্থিত ব্যক্তিরা*
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা * সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী * বিচার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আইনজীবীরা
*ই-পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে যে সমস্যাগুলোর সমাধান হবে
মামলার দীর্ঘসূত্রতা *
অতিরিক্ত খরচ *
দূরত্ব ও যাতায়াতজনিত সমস্যা *
কাগজপত্র হারানো বা পাশে রাখা জটিলতা *
ভিড় ও অপেক্ষায় সময় নষ্ট *
শুনানির তারিখ বারবার বদলের ভোগান্তি ডিজিটাল সিস্টেমে এসব সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।