11/24/2025 গাজায় যুদ্ধ থামেনি—‘সমঝোতার আগুন’ জ্বলছে প্রতিদিনই, ৪৪ দিনে ৫০০ বার হামলার অভিযোগ
odhikarpatra
২৪ November ২০২৫ ১৮:৫১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, অধিকার পত্র ডটকম
গাজায় ঘোষিত তথাকথিত “যুদ্ধবিরতি” আসলে কোনো বিরতিই নয়—বরং আন্তর্জাতিক কূটনীতির আড়ালে চলমান আক্রমণের নতুন রূপ বলেই দাবি করছে মানবাধিকারকর্মী ও বিশ্লেষকরা। অক্টোবরের তথাকথিত “সিজফায়ার” ঘোষণার পরও ইসরায়েল নিয়মিতভাবে বোমা বর্ষণ ও অবরোধ অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত ৪৪ দিনে অন্তত ৫০০ বার এই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে প্রাণ হারিয়েছে ৩৪২ বেসামরিক ফিলিস্তিনি। সবচেয়ে ভয়াবহ দিন ছিল অক্টোবর ২৯, যেদিন এক দিনের হামলায় ১০৯ ফিলিস্তিনি, তাদের মধ্যে ৫২ শিশু, নিহত হয়।
সাম্প্রতিক হামলায় গাজা সিটির জাইতুন এলাকায় এক পরিবারসহ ৩২ জন নিহত হয়েছেন। অধিকাংশ মানুষ আশ্রয়হীন অবস্থায় একটি ভবনে ছিলেন।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী গাজায় প্রতিদিন ৬০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢোকার কথা থাকলেও, প্রবেশ করতে পারছে মাত্র ১৫০টি।
মাংস, দুগ্ধজাত খাবার, সবজি, ওষুধ, তাঁবু, চিকিৎসা উপকরণ—সবকিছুতেই কঠোর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এমনকি, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ–র কাছে মাসের পর মাস চাল–ডাল–ময়দা মজুদ থাকলেও, সেগুলো গাজায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, যা আন্তর্জাতিক আদালত ICJ–এর নির্দেশনার সরাসরি লঙ্ঘন।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত গাজায় “সম্ভাব্য গণহত্যা” চলছে উল্লেখ করে জরুরি বেশ কিছু ব্যবস্থা নিতে বলেছিল—
কিন্তু এসব কোনোটাই বাস্তবায়ন করা হয়নি বলে জানাচ্ছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা।
১৭ নভেম্বর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রণীত ২০ দফা গাজা পরিকল্পনা সমর্থন করে ২৮০৩ নম্বর প্রস্তাব পাস করে।
এর মাধ্যমে—
গঠন করার প্রস্তাব করা হয়। সমালোচকদের মতে, এতে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর আরও একটি বিদেশি নিয়ন্ত্রণ কাঠামো চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এই প্রস্তাবে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, বা দায়বদ্ধতার কোনো আলাপই নেই, যা আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে—
“এটি যুদ্ধবিরতি নয়, বরং ধারাবাহিক ধ্বংসযজ্ঞ। খাদ্য, পানি, ওষুধ—কিছুই যথেষ্ট পরিমাণ প্রবেশ করছে না। বোমা বর্ষণও বন্ধ হয়নি।”
গাজার মানুষ এখনও—
তাদের মতে, “এটিকে যুদ্ধবিরতি বলা হলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে আসল সত্য আড়াল করার একটি কূটনৈতিক পদ্ধতি।”