ঢাকা, ৬ ডিসেম্বর, ২০২০ : আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যা বিচারের জন্য আইনী লড়াইয়ে গাম্বিয়ার পক্ষে ওআইসির তহবিল সংগ্রহ অভিযানে এখন পর্যন্ত ১ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহ হয়েছে। পশ্চিম আফ্রিকার দেশটি বলছে আইনজীবীদের অর্থ প্রদানের জন্য জরুরি প্রয়োজন পাঁচ মিলিয়ন ডলার।
৫৭ টি দেশের বৃহত্তর মুসলিম জনগোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)- এর কর্মকর্তারা বলেছেন, জেনারেল সেক্রেটারিয়েট বলেছে, সংগৃহীত ১ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে ৫ লক্ষ ডলার দিয়ে বাংলাদেশ এই তহবিলের বৃহত্তম অবদানকারী হিসাবে উঠে এসেছে।
তারা জানান, সৌদি আরব ৩ লাখ, তুরস্ক, নাইজেরিয়া এবং মালয়েশিয়া প্রত্যেকে ১ লাখ করে প্রদান করেছে, অবশিষ্ট অংশ এসেছে ওআইসির একটি বিশেষ সলিডরিটি তহবিল থেকে।
অন্যদিকে গাম্বিয়া বলেছে, ওয়াশিংটন ভিত্তিক একটি আইন ফার্মকে আইসিজে-তে এই আইনী লড়াইয়ের জন্য অর্থ প্রদান করতে অবিলম্বে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন।

গত সপ্তাহে নাইজেরে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মেলনের (সিএফএম) সাক্ষাৎকারে গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী দাউদা এ জলো বাসস-এর কূটনীতিক সংবাদদাতা তানজিম আনোয়ারকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমাদের আন্তর্জাতিক আইনজীবী এবং সহায়তাকারী কর্মীদের বেতন দেওয়ার জন্য আমাদের এখনই ৫ মিলিয়ন ডলার দরকার। তিনি বলেন, গাম্বিয়া আসলে আইসিজে মামলার পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক আইনজীবী দলকে অর্থ প্রদানের বিষয়টি নিয়ে ‘তীব্র চাপের’ মধ্যে ছিল। জলো অনুমান করেছিলেন, আইসিজে-তে চূড়ান্ত রায় না পাওয়া পর্যন্ত আইনী যুদ্ধ পরিচালনার জন্য ব্যয় ১০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি হতে পারে। গাম্বিয়া তার নেতৃত্বে গাম্বিয়ার আইনজীবিদের একটি গ্রুপের সঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসি-র ফোলি হগ লিগ্যাল ফার্মের আন্তর্জাতিক আইনজীবীদের একটি দল নিয়োগ করেছে।
সিএফএমের বৈঠকে গাম্বিয়া ও বাংলাদেশ উভয় পক্ষই এই মামলাটির জন্য ওআইসির সহযোগী রাষ্ট্রীয় আর্থিক সহায়তার আহ্বান জানাতে জোরালো আবেদন জানিয়েছিল। আর এদের পক্ষ থেকে জেনারেল সেক্রেটারিয়েট অনুদান গ্রহণের জন্য একটি বিশেষ অ্যাকাউন্ট খোলে।

ওআইসির মহাসচিব ড. ইউসুফ বিন আহমেদ আল-ওথামীন সিএফএমকে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের তাদের ‘নিজ¯ ভূখন্ডে’ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং সমস্ত মানবাধিকারকে অস্বীকার করা হয়েছে। সিএমএফ-পরবর্তী একটি সংবাদ সম্মেলনে জিজ্ঞাসা করা হলে গণহত্যা মামলার তহবিল সংগঠিত করার জন্য ওআইসির কী পদক্ষেপ ছিল, ওআইসির মহাসচিব বলেন, তিনি সমস্ত সদস্য দেশকে আরও তহবিল অনুদানের আহ্বান জানান। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি একটি জাতিগত নিধন, এটি একবিংশ শতাব্দীতে অকল্পনীয়।