04/19/2025 সহীহ বোখারী ২৬ থেকে ৪০
amaderodhikarpatra@gmail.com
২০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৪:১৭
হাদীস ২৬ :
পরিচ্ছদঃ ২৪/ মুনাফিকের আলামত
৩৩। কাবীসা ইবনু ‘উকবা (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি সওয়াসাল্লাম বলেনঃ চারটি স্বভাব যার মধ্যে থাকে সে হবে খাঁটি মুনাফিক। যার মধ্যে এর কোন একটি স্বভাব থাকবে, তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকের একটি স্বভাব থেকে যায়।
১/ আমানত রাখা হলে খেয়ানত করে
২/ কথা বললে মিথ্যা বলে
৩/ চুক্তি করলে ভঙ্গ করে এবং
৪/ বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীল গালি দেয়। শু’বা আ’মাশ (রহঃ) থেকে হাদীস বর্ণনায় সুফিয়ান (রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন।
হাদীস ২৭ :
পরিচ্ছদঃ ২৫/ লায়লাতুল কদরে ইবাদতে রাত্রি জাগরণ ঈমানের অন্তর্ভু
৩৪/ আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যে ব্যাক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় লায়লাতুল কদর-এ ইবাদতে রাত্রি জাগরণ করবে, তার অতীতের গুনাহ্ মাফ করে দেওয়া হবে।
হাদীস ২৮:
পরিচ্ছদঃ ২৬/ জিহাদ ঈমানের অন্তর্ভুক্ত
৩৫। হারামীয়া ইবনু হাফ্স (রহঃ) আবূ যুর’আ ইবনু ‘আমর ইবনু জারীর (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি . আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, তিনি ইরশাদ করেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর রাস্তায় বের হয়, যদি সে শুধু আল্লাহর উপর ঈমান এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাসের কারনে বের হয়ে থাকে, তবে আল্লাহ্ তা’আলা ঘোষণা দেন যে, আমি তাকে ঘরে ফিরিয়ে আনব তার সওয়াব বা গনীমত (ও সওয়ার) সহ কিংবা তাকে জান্নাতে দাখিল করব।
আর আমার উম্মতের উপর কষ্টদায়ক হবে বলে যদি মনে না করতাম তবে কোন সেনাদলের সাথে না গিয়ে বসে থাকতাম না। আমি অবশ্যই এটা পছন্দ করি যে, আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হই, আবার জীবিত হই, আবার শহীদ হই, আবার জীবিত হই, আবার শহীদ হই।
হাদীস ২৯ :
পরিচ্ছদঃ ২৭/ রমযানের রাতে নফল ইবাদত ঈমানের অঙ্গ
৩৬। ইসমা’ঈল (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যে ব্যাক্তি রমযানের রাতে সওয়াবের আশায় রাত জেগে ইবাদত করে, তার পূর্বের গুনাহ্ মাফ করে দেওয়া হয়।
হাদীস ৩০ :
পরিচ্ছদঃ ২৮/ সওয়াবের আশায় রমযানের সিয়াম পালন ঈমানের অঙ্গ
৩৭। ইবনু সালাম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যে ব্যাক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমযানের সিয়াম পালন করে, তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
হাদীস ৩১ :
পরিচ্ছদঃ ২৯/ দ্বীন সহজ
৩৮। আবদুস সালাম ইবনু মুতাহ্হার (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ-সরল। দ্বীন নিয়ে যে কড়াকড়ি করে দ্বীন তার উপর বিজয়ী হয়। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন কর এবং (দ্বীনের) নিকটবর্তী থাক, নিয়মিত পুন্যের কাজে পুরষ্কারের সুসংবাদ গ্রহন কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় ও রাতের কিছু অংশে (ইবাদতের মাধ্যমে) আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা কর।
[অনুবাদ সংশোধন করা হয়েছে, সহিহ বুখারী, দার-উস-সালামের বাংলা অনুবাদের আলোকে, ২৫/১১/২০১৩]
হাদীস ৩২ :
পরিচ্ছদঃ ৩০/ সালাত ঈমানের অন্তর্ভুক্ত
৩৯। ‘আমর ইবনু খালিদ (রহঃ) বারা ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় হিজরত করে সর্বপ্রথম আনসারদের মধ্যে তাঁর নানাদের গোত্র [ আবূ ইসহাক (রহঃ) বলেন] বা মামাদের গোত্রে এসে ওঠেন। তিনি ষোল-সতের মাস বায়তুল মুকাদ্দসের দিকে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। কিন্তু তাঁর পছন্দ ছিল যে, তাঁর কিবলা বায়তুল্লাহ্র দিকে হোক। আর তিনি (বায়তুল্লাহ্র দিকে) প্রথম যে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন, তা ছিল আসরের সালাত (নামায/নামাজ) এবং তাঁর সঙ্গে একদল লোক উক্ত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন।
তাঁর সঙ্গে যাঁরা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছিলেন তাঁদের একজন লোক বের হয়ে এক মসজিদে মুসল্লীদের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তাঁরা তখন রুকু’র অবস্থায় ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ “আমি আল্লাহ্কে সাক্ষী রেখে বলছি যে, এইমাত্র আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মক্কার দিকে ফিরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে এসেছি। তখন তাঁরা যে অবস্থায় ছিলেন সে অবস্থায়ই বায়তুল্লাহ্র দিকে ঘুরে গেলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন তখন ইয়াহূদীদের ও আহলি কিতাবদের কাছে এটা খুব ভাল লাগত; কিন্তু তিনি যখন বায়তুল্লাহ্র দিকে (সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য) তাঁর মুখ ফিরালেন তখন তারা এর প্রতি চরম অসন্তুষ্ট হল।
যুহায়র (রহঃ) বলেন, আবূ ইসহাক (রহঃ) বারা (রাঃ) থেকে আমার কাছে যে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তাতে এ কথাও রয়েছে যে, কিবলা পরিবর্তনের পূর্বে বেশ কিছু লোক ইন্তেকাল করেছিলেন এবং শহীদ হয়েছিলেন, তাঁদের ব্যাপারে আমরা কি বলব, বুঝতে পারছিলাম না, তখন আল্লাহ্ তা’আলা নাযিল করেনঃ “আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদের সালাত (নামায/নামাজ) কে (যা বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে আদায় করা হয়েছিল) বিনষ্ট করবেন না।
হাদীস ৩৩:
পরিচ্ছদঃ ৩১/ উত্তমরূপে ইসলাম গ্রহন
৪০। মালিক (রহঃ) আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, বান্দা যখন ইসলাম গ্রহণ করে এবং তার ইসলাম উত্তম হয়, আল্লাহ্ তা’আলা তার আগের সব গুনাহ্ মাফ করে দেন। এরপর শুরু হয় প্রতিদান; একটি সৎ কাজের বিনিময়ে দশ গুণ থেকে সাতশ গুণ পর্যন্ত; আর একটি মন্দ কাজের বিনিময়ে ঠিক ততটুকু মন্দ প্রতিফল। অবশ্য আল্লাহ্ যদি মাফ করে দেন তবে ভিন্ন কথা।
ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যখন উত্তমরূপে ইসলামের উপর কায়েম থাকে তখন সে যে নেক আমল করে তার প্রত্যেকটির বিনিময়ে সাতশ গুণ পর্যন্ত (সওয়াব) লেখা হয়। আর সে যে মন্দ কাজ করে তার প্রত্যেকটির বিনিময়ে তার জন্য ঠিক ততটুকুই মন্দ লেখা হয়।
হাদীস ৩৪ :
পরিচ্ছদঃ ৩২/ আল্লাহ্ তা'আলার কাছে সবচাইতে পছন্দনীয় আমল সেটাই যা নিয়মিত করা হয়
৪১। মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার তাঁর কাছে আসেন, তাঁর নিকট এক মহিলা ছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেনঃ ‘ইনি কে? আয়িশা (রাঃ) উত্তর দিলেন অমুক মহিলা, এ বলে তিনি তাঁর সালাত (নামায/নামাজ)-এর উল্লেখ করলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘থাম, তোমরা যতটুকু সামর্থ্য রাখ, ততটুকুই তোমাদের করা উচিৎ। আল্লাহর কসম! আল্লাহ্ তা’আলা ততক্ষন পর্যন্ত (সওয়াব দিতে) বিরত হন না, যতক্ষন না তোমরা নিজেরা ক্লান্ত হয়ে পড়। আল্লাহর কাছে সবচাইতে পছন্দনীয় আমল তা-ই, যা আমলকারী নিয়মিত করে থাকে।
হাদীস ৩৫ :
পরিচ্ছদঃ ৩৩/ ঈমানের বাড়া-কমা। আল্লাহ্ তা'আলার বানীঃ আমি তাঁদের হিদায়াত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম (১৮-৩৩) যাতে মুমিনদের ঈমান আরো বেড়ে যায় (৭৪-৩১) তিনি আরও ইরশাদ করেন, আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণাংগ করে দিলাম (৫-৩) পূর্ণ জিনিস থেকে কিছু বাদ দেয়া হলে তা অসম্পূর্ণ হয়।
৪৩। হাসান ইবনুুস সাব্বাহ্ (রহঃ) ‘উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, এক ইয়াহূদী তাঁকে বললঃ হে আমীরুল মু‘মিনীন! আপনাদের কিতাবে একটি আয়াত আছে যা আপনারা পাঠ করে থাকেন, তা যদি আমাদের ইয়াহূদী জাতির উপর নাযিল হত, তবে অবশ্যই আমরা সে দিনকে ঈদ হিসেবে পালন করতাম। তিনি বললেন, কোন আয়াত? সে বললঃ “আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন মনোনীত করলাম। ” (৫:৩) ‘উমর (রাঃ) বললেন এটি যে দিন এবং যে স্থানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর নাযিল হয়েছিল তা আমরা জানি; তিনি সেদিন ‘আরাফায় দাঁড়িয়েছিলেন এবং তা ছিল জুম‘আর দিন।
হাদীস ৩৬ :
পরিচ্ছদঃ ৩৪/ যাকাত ইসলামের অঙ্গ। আল্লাহ্ তা'আলার বাণীঃ তাঁরা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর অনুগত্য বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে এবং সালাত কায়েম করতে, যাকাত দিতে। আর এ-ই সঠিক দ্বীন (৯৮-৫)
৪৪। ইসমা’ঈল (রহঃ) তালহা ইবনু উবায়দুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাজ্দবাসী এক ব্যাক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলো। তার মাথার চুল ছিল এলোমেলো। আমরা তার কথার মৃদু আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলাম, কিন্তু সে কি বলছিল, আমরা তা বুঝতে পারছিলাম না। এভাবে সে কাছে এসে ইসলাম সম্পর্কে প্রশ্ন করতে লাগল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘দিন-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ)। ’ সে বলল, ‘আমার উপর এ ছাড়া আরো সালাত (নামায/নামাজ) আছে?’ তিনি বললেনঃ ‘না, তবে নফল আদায় করতে পার। ’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘আর রমযানের সিয়াম। ’ সে বলল, ‘আমার উপর এ ছাড়া আরো সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আছে?’ তিনি বললেনঃ ‘না, তবে নফল আদায় করতে পার। ’ বর্ণনাকারী বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে যাকাতের কথা বললেন। সে বলল, ‘আমার ওপর এ ছাড়া আরো দেয় আছে?’ তিনি বললেনঃ ‘না, তবে নফল হিসেবে দিতে পার। ’ বর্ণনাকারী বলেন, ‘সে ব্যাক্তি এই বলে চলে গেলেন, ‘আল্লাহর কসম! আমি এর চেয়ে বেশিও করব না এবং কমও করব না। ’ তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘সে সফলকাম হবে যদি সত্য বলে থাকে।
হাদীস ৩৭ :
পরিচ্ছদঃ ৩৫/ জানাযার অনুগমন ঈমানের অঙ্গ
৪৫। আহমদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আলী আল-মানজূফী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যে ব্যাক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় কোন মুসলমানের জানাযায় অনুগমন করে এবং তার সালাত (নামায/নামাজ)-ই জানাযা আদায় ও দাফন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সাথে থাকে, সে দুই কীরাত সওয়াব নিয়ে ফিরবে। প্রতিটি কীরাত হল উহুদ পর্বতের মতো। আর যে ব্যাক্তি শুধু জানাযা আদায় করে, তারপর দাফন সম্পন্ন হওয়ার আগেই চলে আসে, সে এক কীরাত সওয়াব নিয়ে ফিরবে। ‘উসমান আল-মুয়ায্যিন (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদীস ৩৮ :
পরিচ্ছদঃ ৩৬/ অজ্ঞাতসারে মুমিনের আমল নষ্ট হওয়ার আশংকা, ইবরাহিম তায়মী (রহঃ) বলেনঃ আমার আমলের সাথে যখন আমার কথা তুলনা করি, তখন আশঙ্কা হয়, আমি না মিথ্যাবাদী হই। ইবনু আবূ মুলায়কা (রহঃ) বলেন, আমি নাবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এমন ত্রিশজন সাহাবীকে পেয়েছি, যারা সবাই নিজেদের সম্পর্কে নিফাকের ভয় করতেন। তাঁরা কেউ এ কথা বলতেন না যে, তিনি জিবরীল (আঃ) ও মীকাঈল (আঃ) এর তুল্য ঈমানের অধিকারী। হাসান বসরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত, নিফাকের ভয় মু'মিনই করে থাকে। আর কেবল মুনাফিকই তা থেকে নিশ্চিত থাকে। তউবা না করে পরস্পর লড়াই করা ও পাপাচারে লিপ্ত হওয়া থেকে সতর্ক থাকা। কারন আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ এবং তাঁরা (মুত্তাকিরা) যা করে ফেলে, জেনে শুনে তাঁর (গুনাহর) পুনরাবৃতি করে না (৩-১৩৫)
৪৬। মুহাম্মদ ইবনু ‘আর ‘আরা (রহঃ) যুবায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি আবূ ওয়াইল (রহঃ)-কে মুরজিআ১ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ) আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ মুসলিমকে গালি দেওয়া ফাসিকী এবং তার সাথে লড়াই করা কুফরী।
হাদীস ৩৯ :
পরিচ্ছদঃ ৩৬/ অজ্ঞাতসারে মুমিনের আমল নষ্ট হওয়ার আশংকা, ইবরাহিম তায়মী (রহঃ) বলেনঃ আমার আমলের সাথে যখন আমার কথা তুলনা করি, তখন আশঙ্কা হয়, আমি না মিথ্যাবাদী হই। ইবনু আবূ মুলায়কা (রহঃ) বলেন, আমি নাবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এমন ত্রিশজন সাহাবীকে পেয়েছি, যারা সবাই নিজেদের সম্পর্কে নিফাকের ভয় করতেন। তাঁরা কেউ এ কথা বলতেন না যে, তিনি জিবরীল (আঃ) ও মীকাঈল (আঃ) এর তুল্য ঈমানের অধিকারী। হাসান বসরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত, নিফাকের ভয় মু'মিনই করে থাকে। আর কেবল মুনাফিকই তা থেকে নিশ্চিত থাকে। তউবা না করে পরস্পর লড়াই করা ও পাপাচারে লিপ্ত হওয়া থেকে সতর্ক থাকা। কারন আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ এবং তাঁরা (মুত্তাকিরা) যা করে ফেলে, জেনে শুনে তাঁর (গুনাহর) পুনরাবৃতি করে না (৩-১৩৫)
৪৭। কুতায়বা ইবনু সা’ঈদ (রহঃ) ‘উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লায়লাতুল কদ্র সম্পর্কে খবর দেওয়ার জন্য বের হলেন। তখন দু’জন মুসলমান পরস্পর বিবাদ করছিল। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের লায়লাতুল কদ্র সম্পর্কে খবর দেওয়ার জন্য বেরিয়েছিলাম; কিন্তু তখন অমুক অমুক বিবাদে লিপ্ত থাকায় তা (নির্দিষ্ট তারিখ সম্পর্কিত জ্ঞান) উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর হয়তো বা এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর হবে। তোমরা তা অনুসন্ধান কর ২৭, ২৯ ও ২৫ তম রাতে।
হাদীস ৪০ :
পরিচ্ছদঃ ৩৭/ জিবরাঈল (আঃ) কর্তৃক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ঈমান, ইসলাম, ইহসান ও কিয়ামতের জ্ঞান সম্পর্কে প্রশ্ন। জিবরীল (আঃ) কর্তৃক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ঈমান, ইসলাম, ইহসান ও কিয়ামতের জ্ঞান সম্পর্কে প্রশ্ন আর তাকে দেওয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উত্তর। তারপর তিনি বললেনঃ জিবরীল (আঃ) তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দিতে এসেছিলেন। তিনি এসব বিষয়কে দ্বীন বলে আখ্যায়িত করেছেন। ঈমান সম্পর্কে আব্দুল কায়স গোত্রের প্রতিনিধি দলকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে বিবরন দিয়েছেন এবং আল্লাহ্ তা'আলা ইরশাদ করেছেনঃ কেউ ইসলাম ব্যাতিত অন্য কোন দ্বীন গ্রহন করতে চাইলে তা কখনো কবুল করা হবে না (৩-৮৫)
৪৮। মূসা’দ্দাদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনসমুক্ষে বসা ছিলেন, এমন সময় তাঁর কাছে এক ব্যাক্তি এসে জিজ্ঞাসা করলেন ‘ঈমান কি?’ তিনি বললেনঃ ‘ঈমান হল, আপনি বিশ্বাস রাখবেন আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফিরিশতাগণের প্রতি, (কিয়ামতের দিন) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রতি এবং তাঁর রাসূল) গণের প্রতি। আপনি আরো বিশ্বাস রাখবেন পুনরুত্থানের প্রতি। ’ তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ইসলাম কি?’ তিনি বললেনঃ ‘ইসলাম হল, আপনি আল্লাহর ইবাদত করবেন এবং তাঁর সঙ্গে শরীক করবেন না, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করবেন, ফরয যাকাত আদায় করবেন এবং রমযানের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করবেন। ’ ঐ ব্যাক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ইহসান কি?’ তিনি বললেনঃ ‘আপনি এমন ভাবে আল্লাহর ইবাদত করবেন যেন আপনি তাঁকে দেখছেন, আর যদি আপনি তাঁকে দেখতে না পান তবে (বিশ্বাস রাখবেন যে,)তিনি আপনাকে দেখছেন। ’ ঐ ব্যাক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কিয়ামত কবে?’ তিনি বললেনঃ ‘এ ব্যাপারে যাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, তিনি জিজ্ঞাসাকারী অপেক্ষা বেশি জানেন না। তবে আমি আপনাকে কিয়ামতের আলামতসমূহ বলে দিচ্ছিঃ বাঁদী যখন তার প্রভুকে প্রসব করবে এবং উটের নগণ্য রাখালেরা যখন বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণে প্রতিযোগিতা করবে। (কিয়ামতের বিষয়) সেই পাঁচটি জিনিসের অন্তর্ভূক্ত, যা আল্লাহ্ ছাড়া কেউ জাননা। ’ এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আয়াতটি শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করলেনঃ “কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহই নিকট। ” (৩১:৩৪) এরপর ঐ ব্যাক্তি চলে গেলে তিনি বললেনঃ ‘তোমরা তাকে ফিরিয়ে আন। ’ তারা কিছুই দেখতে পেল না। তখন তিনি বললেন, ‘ইনি জিবরাঈল আলাইহি ওয়া সাল্লাম। লোকদের দ্বীন শেখাতে এসেছিলেন। ’ আবূ আব্দুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসব বিষয়কে ঈমানের অন্তর্ভুক্ত করেছেন৷