05/05/2025 বিশ্বে বাস্তুহারার সংখ্যা সাত দশকে সর্বোচ্চ
Admin 1
২০ জুন ২০১৭ ০৯:২৭
যুদ্ধ, সহিংসতা ও নির্যাতন-নিপীড়নের কারণে বিশ্বে বাস্তুহারা হওয়া লোকের সংখ্যা গত সাত দশকের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি। তাঁদের কেউ হয় বিদেশে শরণার্থী, নয় আশ্রয়প্রার্থী কিংবা দেশের ভেতরেই বাস্তুচ্যুত হওয়া। গতকাল সোমবার জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
ইউএনএইচসিআরের বার্ষিক গ্লোবাল ট্রেন্ড রিপোর্টে (বৈশ্বিক প্রবণতা) দেখা গেছে, ২০১৬ সালের শেষ নাগাদ সারা বিশ্বে বাস্তুহারা হতে বাধ্য হয়েছেন ৬ কোটি ৫৬ লাখ মানুষ। এটা যুক্তরাজ্যের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। আর গত বছর সবচেয়ে বেশি লোক উদ্বাস্তু হয়েছেন আফ্রিকার দক্ষিণ সুদানে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর গড়ে প্রতি মিনিটে ২০ জন করে লোক (অর্থাৎ প্রতি ৩ সেকেন্ডে একজন) উদ্বাস্তু হতে বাধ্য হয়েছেন।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, যেভাবেই দেখা হোক না কেন, উদ্বাস্তু লোকের এই সংখ্যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা আন্তর্জাতিক কূটনীতির একটি হতাশাজনক ব্যর্থতা।
ইউএনএইচসিআর বলেছে, বিশ্বজুড়ে বাস্তুচ্যুত সাড়ে ৬ কোটি লোকের মধ্যে শরণার্থী ২ কোটি ২৫ লাখ, স্বদেশের ভেতরে বাস্তুহারা ৪ কোটি ৩ লাখ এবং বিভিন্ন দেশে আশ্রয়প্রার্থী ২৮ লাখ। এ ছাড়া দক্ষিণ সুদানে সহিংসতার কারণে ২০১৬ সালে দেশটির প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার লোক প্রতিবেশী উগান্ডায় আশ্রয় নিয়েছেন। বছর হিসেবে এই সংখ্যা সিরিয়াসহ অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি। গত বছর আনুমানিক ২ লাখ লোক সিরিয়া ছেড়ে গেছেন।
গত পাঁচ বছরে আলাদাভাবে উদ্বাস্তু লোকের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৬ সালে এ সংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠে। কিন্তু গত বছরে আগের বছরের চেয়ে উদ্বাস্তুর সংখ্যা বেড়েছে ৩ লাখ। ২০১৪ থেকে ২০১৫ সালের বৃদ্ধির তুলনায় তা কম, তখন উদ্বাস্তু লোকের সংখ্যা বেড়েছিল ৫০ লাখ। অর্থাৎ ২০১৬ সালে উদ্বাস্তু হওয়ার প্রবণতা কমেছে। তবে আন্তর্জাতিক সীমান্তে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ২ কোটি ২৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৫০ সালে ইউএনএইচসিআর প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ।
বাস্তুহারা লোকের বিশাল এই সংখ্যা আগের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। এ প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ আশা করছে, সম্পদশালী দেশগুলো কেবল শরণার্থী গ্রহণই নয়, এর পাশাপাশি শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ও পুনর্গঠনে বিনিয়োগ করতে এখন মনোযোগী হবে।