04/20/2025 বিদ্যালয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও নানা সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে পাঠদান
মো. আহসানুল ইসলাম আমিন
১৪ আগস্ট ২০২২ ০৭:৫১
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের ভট্রাচার্যেরবাগ সরকারি প্রাথমিক ১ নং ভবনের ৪টি কক্ষই সংস্কার অভাবে দেয়াল ও ছাদের আস্তর খসে খসে পড়ছে। পাশাপাশি ভবনটির দেয়াল ও ছাদে দেখা দিয়েছে ফাঁটল। বর্তমানে বিদ্যালয়টির ১ নং ভবনের ২টি কক্ষে দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও নানা সংকটের মধ্য দিয়ে পাঠদান চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা আরো জানান, বিদ্যালয়টির জরাজীর্ণ ভবনে রয়েছে ভবনে ৪টি কক্ষ। ২টি কক্ষে পাঠদান আর বাকী দুটি কক্ষ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ভবনটির বিভিন্ন রুমের ভিতর আস্তর খসে পড়ার পাশাপাশি পুরো ভবনটির বেশ কিছু স্থানে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। শ্রেণি কক্ষে পাঠদান গ্রহণের সময় রুমের ভিতরে ছাদের আস্তর খসে পড়ে। বিদ্যালয়টির উত্তর ও দক্ষিন প্রান্তে নেই বাউন্ডারি ওয়াল। একটি মাত্র শহীদ মিনার আছে সেটিও ভঙ্গুর অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। এখানে যদি নতুন একটি ভবন নির্মাণ করা হলে শিক্ষার্থীদের শ্রেনী সংকট সমস্যা কেটে যেতো বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়টির নির্জন স্থানে অবস্থিত। বিদ্যালয়ের উত্তর ও দক্ষিন প্রান্তে নেই বাউন্ডারি ওয়াল। পশ্চিম পাশের ভবনের নিচতলা বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র। সেখান দিয়েও রাতের বেলা মাদকসেবীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ঢুকে আড্ডাবাজি ও মাদক সেবন করেন। বিদ্যালয়ের ওয়াশব্লাকের পানির কলগুলোও মাঝে মধ্যে চুরি হয়ে যায়। অরক্ষিত অবস্থায় থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও পাঠদানের সুষ্ট পরিবেশ পাচ্ছেনা। বিদ্যালয়ের গেটের সামনে মাটি ভরাট না করায় সামান্য বৃষ্টি হলেই গেটের সামনে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। জরাজীর্ণ ১ নং ভবনটির দেয়াল ও ছাদের আস্তর খসে খসে পড়ে। এখানে নতুন ভবন হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু সেই খবনটিও নির্মাণ করা হচ্ছেনা। বিদ্যালয়টিতে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হলো পুরো বিদ্যালয়টি সুরক্ষিত হবে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানাগেছে, ১৯৭৩ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টিতে ভট্রাচার্যেরবাগ ও বনিক্যপাড়া এলাকার শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করেন। স্কুলটিতে প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেনি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাঠদান দেয়া হচ্ছে। ৮জন শিক্ষক এখন বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে দায়িত্ব পালন করছেন। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে সর্বমোট শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ৫২০ জন। বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষকের পদটি শুন্য রয়েছে। বর্তমানে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়টিতে দায়িত্ব পালন করছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিদ্যালয়টিতে মোট তিনটি ভবনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম । বিশেষ করে ১ নং ভবনে অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই শিক্ষার্থীরা পাঠদান গ্রহণ করছেন। সেখানে বিভিন্ন কক্ষে দেয়াল ও ছাদের আস্তর খসে খসে পড়ছে। পশ্চিম পাশের ভবনটির নিচতলায় আশ্রয়কেন্দ্র আর দ্বিতীয় তলায় চলছে পাঠদান। পূর্বপাশের ভবনটিতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকদের অফিস রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে থাকা শহীদ মিনারটি অনেকটাই ভঙ্গুর অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। বিদ্যালয়টির উত্তর- পশ্চিম পাশের বড় একটি অংশে নেই বাউন্ডারি ওয়াল। বিদ্যালয়টির সীমানা প্রাচীর না থাকায় অরক্ষিত অবস্থা।
বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, বিদ্যালয়টি একতলা ১ নং পুরাতন ভবনটিতে শ্রেণি কক্ষের ভিতরে আস্তর খসে পড়ছে। শ্রেণি কক্ষ সংকটে তারা ঝুঁকি থাকা সত্বেও ক্লাস করছেন। আস্তর খসে পড়ে শ্রেণি কক্ষ নোংরা হওয়ার পাশাপাশি তাদের পাঠদানে নানা ব্যাঘাত ঘটছে। দিনভর ছাদের আস্তর ও দেয়ালের রঙ /আস্তর খসে খসে পড়ে শরীর নোংরা হচ্ছে। ফ্যানের বাতাসে ধুলোবালি উঁড়ে চোখে লাগছে। বিদ্যালয়টিতে নানামুখী সংকটের কারনে দিন দিন শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবনটি নির্মাণ করে শ্রেণি কক্ষ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের চারপাশে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করে সুরক্ষিত করে তোলার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদ্যালয়টিতে ১ নং ভবনটি ভেঙে এখানে নতুন ভবন নির্মাণ করার পাশাপাশি বিদ্যালয়টিতে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ সম্পন্ন হলে সুরক্ষিত হবে বিদ্যালয়টি। এছাড়াও গেটের সামনে মাটি ভরাট করে পাকা করা দরকার। কারণ সেখানে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।
সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোছা. নাছিমা খানম বলেন, বিদ্যালয়টিতে নতুন ভবন ও বাউন্ডারি ওয়াল নির্মানের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বিদ্যালয়টিতে থাকা বহু সমস্যার সমাধান করেছি। বিদ্যালয়টিতে বিদ্যমান যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলোর সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।