04/20/2025 চীন সেনা সরালেই ভারত সরাবে
shahidul Islam
২১ জুলাই ২০১৭ ০৯:৩৪
সুষমা স্বরাজসিকিম সীমান্তবর্তী ‘তেমাথা’ ডোকলাম থেকে সেনা সরিয়ে নিতে ক্রমাগত চীন যে হুমকি দিয়ে আসছে, তার জবাবে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন, ভারতকে যদি সেনা সরাতে হয়, চীনেরও তাহলে উচিত একই সঙ্গে সেনা প্রত্যাহার করা। দুই দেশ একই সঙ্গে সেনা সরিয়ে নিয়ে আলোচনায় বসুক।
চীন-ভারত সীমান্ত সংকট নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সংসদে সুষমা স্বরাজ ওই বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ভারত অযৌক্তিক কিছু বলেনি। বিশ্বের অন্য দেশগুলোও তাই ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করছে।
ভারত, চীন ও ভুটান সীমান্তের তেমাথা ডোকলাম অঞ্চলে এক মাসের বেশি সময় ধরে ভারত ও চীনের সেনারা মুখোমুখি অবস্থানে। চীন সেখানে পাকা রাস্তা তৈরি করছিল। ভারত তাতে বাধা দেয়। আপত্তি জানায় ভুটানও। এই অবস্থায় চীনের দাবি, ভারত সেনা প্রত্যাহার না করলে কোনো আলোচনার অবকাশ নেই।
তবে ভারত যে একতরফা সেনা প্রত্যাহারে প্রস্তুত নয়, গতকাল রাজ্যসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা তা স্পষ্ট করে দিলেন। তিনি এ সময় আরও বলেন, নিজেদের রক্ষা করার ক্ষমতা ভারতের আছে। আইন ও অধিকার দুটোই ভারতের পক্ষে।
সীমান্ত সংকট নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা নিয়ে গতকাল রাজ্যসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন সুষমা। তিনি বলেন, ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ রয়েছে। তা মেটাতে দুই দেশের মধ্যে স্বীকৃত ব্যবস্থাও রয়েছে। ভুটানের সঙ্গেও চীনের একই রকম বিরোধ রয়েছে। তারাও তাদের মতো করে মীমাংসায় সচেষ্ট।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১২ সালে এই তিন দেশের মধ্যে যে চুক্তি হয়, তার ১৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, তেমাথার সীমান্ত সমস্যা তিন দেশের আলোচনার মধ্য দিয়েই মেটাতে হবে। সুষমা বলেন, চীন ওই তেমাথায় আগেও রাস্তা বানানোর চেষ্টা করেছে; কিন্তু এবার বুলডোজার ও ভারী যন্ত্র নিয়ে উদ্যোগী হয়েছে। ভারত এতেই আপত্তি জানায়। সুষমা বলেন, এটা স্রেফ চীন ও ভুটানের সমস্যা হলে ভারতের কিছুই বলার থাকত না। কিন্তু ডোকলামের সঙ্গে ভারতের নিরাপত্তা জড়িত। চীন ওই জায়গা কবজায় আনতে পারলে তারা পশ্চিমবঙ্গের ‘চিকেন নেক’-এর ঢিল ছোড়া দূরত্বে পৌঁছে যাবে, যা ভারতের নিরাপত্তার জন্য আশঙ্কাজনক।
বিরোধী দলের সদস্যরা চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (এক অঞ্চল ও এক পথ) প্রকল্পের অধীন চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর নির্মাণ নিয়ে প্রশ্ন তুললে সুষমা স্বরাজ বলেন, ভারত একেবারে শুরু থেকেই এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে এসেছে। সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা সব দেশেরই কর্তব্য। সুষমা এ সময় বলেন, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড প্রকল্পে সাড়া দিয়েছে।
চীনের সঙ্গে সীমান্ত সংকট নিয়ে এই প্রথম ভারত সরকার প্রকাশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খুলল। এর আগে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে সরকারের ভূমিকা স্পষ্ট করা হয়েছিল। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করেছিলেন পররাষ্ট্রসচিব এস জয়শঙ্কর।