10/30/2025 প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার নির্ণয় জীবন বাঁচায়, চিকিৎসার খরচ কমায়
odhikarpatra
১২ November ২০২২ ০৭:৫৪
তারা নগরীর একটি হোটেলে চতুর্থ বাংলাদেশ ব্রেস্ট ক্যান্সার কনফারেন্স-২০২২-এ বলেন, দেরিতে সনাক্তকরণ এবং স্বাস্থ্যসেবা সুবিধার সীমিত সুযোগসহ অনেক কারণ বাংলাদেশে স্তন ক্যান্সার রোগী বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টাডি (বিএসবিসিএস) এই সম্মেলনের আয়োজন করে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান চিকিৎসকরা এতে অংশ নেন।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডন এস ডিজন। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ক্যান্সার রিসার্চ অ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. স্বপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজিএইচএস) অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএসবিসিএস সভাপতি অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান চৌধুরী, সহ-সভাপতি ডা. মো. সেলিম রেজা এবং বিএসবিসিএস-এর পৃষ্ঠপোষক অধ্যাপক ডা. সানওয়ার হোসেন।
ডন এস ডিজন বলেন, স্তন ক্যান্সার একটি শীর্ষ ক্যাটাগরির ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে এবং বাংলাদেশে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যই এটি তৃতীয় প্রাণঘাতী রোগ।
ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (আইএআরসি) পরিচালিত গবেষণায় জানা গেছে, জনগণের অসচেতনতা ও ভুল পরীক্ষণ, দুর্বল আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো এবং পরিবেশের কারণে বাংলাদেশে ৬৫.৫ শতাংশ স্তন ক্যান্সারের রোগীর রোগ নির্ণয় ছয় মাসেরও বেশি সময় বিলম্বিত হয়। এটি ক্রমে বাড়ছে।
স্তন ক্যানসারসহ সব ধরনের ক্যান্সারের উদ্বেগজনক বৃদ্ধির জন্য ফরমালিন মেশানো খাবারকে দায়ী করে ডা. আমিন বলেন, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুুক্ত করে এবং বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সরকার নতুন পরিকল্পনা ও কৌশল প্রণয়ন করবে।
ডা. কামরুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী এবং বাংলাদেশেও মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সার রোগ সবচেয়ে বেশি দেখা দিচ্ছে। স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য সার্জারি, কেমোথেরাপি, হরমোনাল থেরাপি এবং ইমিউনোথেরাপির মতো বহুমুখী পদ্ধতির প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, স্তন ক্যান্সার রোগীদের জন্য সর্বোত্তম ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা পেশ করতে ডাক্তারদের একযোগে কাজ করতে হবে।
ডা. সানওয়ার বলেন, ‘স্তন ক্যান্সার বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদ্যমান ক্যান্সার এবং একটি লুকানো মানসিক চাপ, যা ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর ৬.৬%-এর জন্য দায়ী।
৩৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী বাংলাদেশী নারীদের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
অন্য বক্তারা স্তন ক্যান্সার নিয়ে সামাজিক কলঙ্ক দূর করতে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালানোর ওপর জোর দেন এবং ক্যান্সার রোগীদের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা প্রদানের জন্য দ্রুত দক্ষ জনবল গড়ে তোলা প্রয়োজন।
ডিজিএইচএস সূত্র জানিয়েছে, প্রতি বছর ১২,০০০ জনেরও বেশি রোগী নতুনভাবে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং মৃত্যুর হার বেড়ে প্রায় ৭,০০০-এ দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে তিনটি ক্যান্সার হাসপাতাল রয়েছে এবং সরকার খুব শিগগির দেশে আরও পাঁচটি ক্যান্সার হাসপাতাল স্থাপন করবে।