04/22/2025 নিদারুন কষ্টে দিন কাটে পাবনা হাসপাতালের রোগীদের
MASUM
১৪ আগস্ট ২০১৭ ১০:৫৫
প্রতিবছরই দেশের প্রায় সবখাতে উন্নয়ন বাজেট বাড়লেও তার ছোঁয়া লাগে না সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত অসহায় মানসিক রোগীদের চিকিৎসায়। হাসপাতালের রোগীদের জন্য দৈনিক বরাদ্দ মাত্র ১২৫ টাকা। সেখানেও আবার দুর্নীতি। ফলে মানসম্মত খাবারের অভাবে নিদারুন কষ্টে দিন কাটছে রোগীদের জীবন।
বাইরের কাউকে দেখলেই সামনে এসে ওরা মনের কথাগুলো বলতে চায়। বিকশিত করতে চায় লুকিয়ে থাকা নানা প্রতিভাও। এসব দেখলে দূর থেকে মনে হতে পারে হয়তো ওরা এখানে খেয়ে পরে বেশ আছে। তবে পাবনা মানসিক হাসপাতালের ভেতরের চিত্রটা পুরোপুরি আলাদা।
রোগীদের অভিযোগ, খাবার অত্যন্ত নিম্নমানের, তার উপরে বাইরের খাবার খাওয়ার নিয়ম না থাকায় কখনই ক্ষুধা মেটেনা।
প্রতিদিন এই পাবনার মানসিক হাসপাতালে রোগীদের মোট চার বার খাবার দেয়া হয়। সকাল বেলায় একটি করে পাউরুটি, একটি ডিম আর নাম মাত্র সুজি দেয়া হয়। দুপুর আর সন্ধ্যায় দেয়া হয় ভাত, পাঙ্গাশ মাছ ও ডাল। আর রাতে দেয়া হয় মাত্র দুই পিস বিস্কুট ও একটি করে কলা। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মানসিক রোগীরা প্রতিদিন যে পরিমাণ ওষুধ খেয়ে থাকে তার তুলনায় এই খাবার খুবই সামান্য।
ভোগান্তি এখানেই শেষ নয়। থাকার ঘরগুলোর মান নিয়েও আছে বিস্তর অভিযোগ। বৃষ্টি হলেই প্রতিটি কক্ষের ছাদ থেকে পানি পড়ে অনবরত। স্যাঁতসেঁতে মেঝেতে পা পিছলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এছাড়া প্রতি মুহূর্তেই ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ার আতঙ্কে থাকতে হয় অবুঝ রোগীদের।
ভবন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তাদের নয় দাবি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, এখানকার খাবারের মান ও বৈচিত্র্য সেরা।
পাবনা মানসিক হাসপাতাল পরিচালক অধ্যাপক ডা. তন্ময় প্রকাশ বিশ্বাস বলেন, ‘বাজারের দর বাড়ার সাথে সাথে খাবারের বাজেটও বাড়ার দরকার কিন্তু সেটি বাড়েনি। আর এখানে যেটা দেয়া হয় সেটি বাংলাদেশের কোনো হাসপাতালে দেয়া হয় না। আর ভবনের কাজ করে পিডাব্লিউডি বিধাই আমরা কোনো কিছুতেই হাত দিতে পারি না।’
তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, খাবার সরবরাহকারীরা দুর্নীতিগ্রস্ত।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম বলেন, ‘এই অর্থ দিয়ে ভাল খাবার দেয়া সম্ভব। সেখানে নিশ্চয়ই অনিয়ম ও দুর্নীতিগ্রস্ত আছে। আর সেখানে নতুন কোনো ভবন করা যায় কিনা সে ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।’
এছাড়া স্বাস্থ্য খাতে তুলনামূলক কম বাজেট থাকায় হাসপাতালের অবকাঠামোগত উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।