04/20/2025 আজ শহিদ সেলিম-দেলোয়ার ৩৯তম দিবস
odhikarpatra
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২৩:২৬
১৫ ফাল্গুন ১৪২৯, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ :
১৯৮৪ সালের এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে ছাত্র-জনতার এক বিশাল মিছিল রওনা হয় বঙ্গভবনের দিকে। উদ্দেশ্য অবৈধ স্বৈরাচারী সরকারের বদলে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ তারিখে পুলিশ বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত অজানা সংখ্যক ছাত্র হত্যার তদন্ত ও বিচার দাবি করা। মিছিলটি কার্জন হল হয়ে ফুলবাড়িয়া এলে সামনে থেকে পুলিশের ট্রাক কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হয়, যাতে তারা বঙ্গভবনের দিকে যেতে না পারে। সেই সাথে স্বৈরাচারী এরশাদের নির্দেশে পুলিশের আরেকটি দ্রুতগামী ট্রাক পেছন থেকে এসে মিছিলের ওপর উঠে যায়। উদ্দেশ্য ট্রাক চাপা দিয়ে মানুষ মেরে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে সেই বিশাল মিছিলকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া। এই বীভৎস নির্মমতায় অসংখ্য ছাত্র মারাত্মকভাবে আহত হয়, আর শহিদ হন এইচ এম ইব্রাহিম সেলিম ও কাজী দেলোয়ার হোসেন নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন ছাত্র।
আমাদের স্বাধীনতা যেমন এসেছে ৩০ লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে, তেমনি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে শুরু হয় স্বৈরাচারী নিষ্ঠুর শাসনের মধ্য দিয়ে মানুষ হত্যার ভয়াবহ রাজনীতি। কিন্তু বাংলার মানুষ শত শত শহিদের রক্তের আর অনেক আন্দোলনের বিনিময়ে পুনরায় বঙ্গবন্ধু-কন্যার নেতৃত্বে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনে। শত শহিদদের এই প্রাণ বিসর্জনের অতি উচ্চদামে যে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে, তা কোনো সাম্রাজ্যবাদী বা মৌলবাদী চক্রান্তে আবার যেন হারিয়ে না যায় তার জন্য শহিদদের আত্মদানের এই দিবসগুলোর মর্মার্থ বুঝে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহকর্মীদের প্রতি আহ্বান, আসুন আমরা জাতির ইতিহাসের একেকটি মাইলস্টোন এই দিবসগুলোকে জানার চেষ্টা করি এবং এভাবে নিজেরা ইতিহাস-সচেতন হই। কারণ স্বাধীনতা রক্ষা ও স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সোনার মানুষ চাই, আবার ইতিহাস-সচেতনতা ছাড়া সোনার মানুষ হওয়া কিছুতেই সম্ভব নয়।
আজকের এই দিনে আমরা শহিদ সেলিম-দেলোয়ার ও অন্য স-ব শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। সেই সাথে এই বাংলায় যাতে আর কোনোদিন কোনো স্বৈরাচার বা মৌলবাদ সরকার গঠন করতে না পারে তার জন্য সচেতন থাকি।
শুধু দুঃখ হয় এরশাদের করা এতগুলো হত্যার কোনো বিচার হলো না। “এরশাদ এসেছিল স্বৈরাচার হয়ে হাতে রক্ত লাগিয়ে, আর মৃত্যুর সময় সে ‘সাহেব’ হয়ে সবাইকে বুডো আঙ্গুল দেখিয়ে চলে গেল।” আমাদের কিছুই করার উপায় ছিল না।