04/20/2025 জবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে চাদাবাজির অভিযোগ
জবি প্রতিনিধি
১ এপ্রিল ২০২৩ ০৪:১৭
পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক ও সদরঘাট এলাকার ফুটপাতে হকারদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইনের নামে চাঁদা তোলা হয় হয় বলে অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন।
সদরঘাট এলাকার হকারদের সাথে কথা বলে জানা যায় এভাবে প্রতিদিন দোকান প্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা চাঁদা নেওয়া হয়। এভাবে ওই এলাকায় প্রায় ৭০ থেকে ৮০টি দোকান থেকে মাসে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা চাঁদা নেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। তার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন।
গত বুধবার (২৯মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বিষয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন। সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল হাশিম কবির ও সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে সদরঘাট ফ্লাইওভার পর্যন্ত এলাকায় রাস্তার পাশে ফুটপাতে হকারি করে প্রায় শতাধিক লোক জীবিকা নির্বাহ করে।
‘‘প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টায় এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ৭টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপ এবং সাধারণ সম্পাদক গ্রুপ পরিচয়ে পর্যায়ক্রমে দুইবার দল বেঁধে হকারদের নিকট থেকে অর্থ উত্তোলন করেন।’’
চলমান এই জুলুম-নির্যাতন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে চিঠিতে আরও বলা হয়, কোনো হকার দাবিকৃত অংকের টাকা দিতে অপারগ হলে তাদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। গত চার মাস থেকে এই অত্যাচার চলছে। বিভিন্ন জায়গায় বলেও হকারদের এই সংকটের সুরাহা করা সম্ভব হয়নি।
সভাপতি-সেক্রেটারি এখান থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা নেন। আর কর্মীরা যা বেশি তুলতে পারেন তা নিজেরা রাখেন। এজন্য এখন আমাদের ওপর বেশি অত্যাচার হয়। এক বা দুইজন টাকা চাইতে আসে, আর বাকিরা দল ধরে দূরে দাঁড়িয়ে থাকে। যখন যত ইচ্ছা টাকা দাবি করেন, না দিলে মারধরও করে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক হকার অভিযোগ করেন।
বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হকারদের ওপর এভাবে জুলুম করা হচ্ছে। বিষয়টি গত ১৫ দিন আগে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতিকে বিষয়টি জানালে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। কিন্তু এখনও আমরা কোনো প্রতিকার পাইনি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় বরাবর চিঠি দিয়েছি।
সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল হাশিম কবির মুঠোফোনে বলেন, বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে সদরঘাট এর ফ্লাইওভার পর্যন্ত হকারদের থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নাম করে চাঁদাবাজি করে। প্রতিদিন হকারদের থেকে জোর করে টাকা তুলে তাই আমরা উপায় না পেয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দিয়েছি।
এ বিষয়ে জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবগত করা হয়েছে কি না এ বিষয়ে তিনি বলে তাদেরকে অবগত করা হয়নি। আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম কিন্তু কোনো সাড়া পায়নি তাই প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দিয়েছি।
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইন বলেন, এসব মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তারা শুধু ছাত্রলীগের সুনাম নষ্ট করতে চাচ্ছে। আর আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের হকারদের উচ্ছেদ করে ঢাবি, বুয়েটের মত হকারমুক্ত পরিবেশ করতে চাইছিলাম তাই তারা আমাদের নামে উল্টো অভিযোগ দিয়েছে যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, কেউ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা তুললে তার দায়ভার তো আমরা নেব না। তাদের কাছে প্রমাণ থাকলে আমাদের জানাতে পারত। আমাদের কেউ জড়িত থাকলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।