আগাম বন্যা, অতিবৃষ্টি ও উজানের পানিতে হাওর অঞ্চলে বোরো ফসল এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে আউশ নষ্ট হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসনের জন্য লাগবে ১৬৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
আজ বৃহস্পতিবার সংসদীয় কমিটিকে এ তথ্য জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে উপস্থাপিত কৃষি মন্ত্রণালয়ের পুনর্বাসন কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়, চলতি বছরে এপ্রিল থেকে মে মাসে হাওরের ৬ জেলায় আগাম বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর বোরোর ক্ষতি হয়। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আউশ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১০ লাখ ২৫ হাজার হেক্টর থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ ৯২ হাজার হেক্টর করা হয়। কিন্তু আবার অতি বৃষ্টি এবং উজানের পানিতে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার, বান্দরবান, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলায় ১০ হাজার ৬৪১ হেক্টর আউশ ধানের জমি এবং ১ হাজার ১১৮ হেক্টর আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
হাওর-অধ্যুষিত জেলাগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসন পরিকল্পনায় ৭৪ কোটি ২৩ লাখ ৬১ হাজার ৭০০ টাকার প্রয়োজন হবে।
কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বর্ষা মৌসুমে দেশের প্রায় ৩০ জেলায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসব এলাকার দেড় লাখ কৃষককে গমের বীজ, ২ লাখ ১৫ হাজার কৃষককে ভুট্টার বীজ, ৩ লাখ ৩০ হাজার কৃষককে সরিষার বীজ, ৬৪ হাজার কৃষককে গ্রীষ্মকালীন মুগের বীজ ও রাসায়নিক সারসহ অন্যান্য বীজ সরবরাহ করা হবে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে মোট ৮ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে এক বিঘা জমির জন্য বিনা মূল্যে বীজ ও সার সরবরাহ করা হবে। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে মোট ১৬৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে।
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটি চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে জেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে বন্যার পর কৃষকদের পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও ভাসমান বীজতলা তৈরির বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে। বৈঠকে বাংলাদেশে উৎপাদিত দেশীয় ফলের খাদ্যাভ্যাস তৈরিতে নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সাংসদ আবদুল মান্নান, মামুনুর রশীদ কিরন, নূরুল ইসলাম ও উম্মে কুলসুম উপস্থিত ছিলেন।