04/21/2025 অধ্যাপক ড. আবদুল মতিন চৌধুরীর ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধু পরিষদের অশেষ শ্রদ্ধা
odhikar patra
২৫ জুন ২০২৩ ০৬:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. আবদুল মতিন চৌধুরীর ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বঙ্গবন্ধু পরিষদের পক্ষ থেকে আজ শনিবার এক যুক্ত-বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি বোস প্রফেসর ড. আবদুল মতিন চৌধুরীর ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতি ও কীর্তি তর্পণ করে গভীর শোক প্রকাশ করেন।
যুক্ত-বিবৃতিতে তাঁরা বলেন,“১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর সারা দেশ যখন শোকস্তব্ধ ও স্তম্ভিত, যখন দেশে প্রতিবাদের ভয়ে বছরের পর বছর সামরিক আইনের সাথে প্রতিরাতে সান্ধ্য আইন জারি করা হতো, যখন পত্রপত্রিকা ও রেডিও টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধু বা মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত শব্দগুলোর উচ্চারণও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ছিল এবং এ জন্য কঠোর শাস্তি দেয়া হতো - জাতির সেই অতীব দুঃসময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার মাননীয় উপাচার্য, বিশ্বখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী বোস প্রফেসর ড. আবদুল মতিন চৌধুরী বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করার চরম সাহসী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালের সেই দিনগুলোতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী-শিক্ষক ও বিজ্ঞানীদের নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ’গঠন করেন। প্রথমে তিনি ছিলেন এর আহ্বায়ক ও রাজনীতি-বিশ্লেষক ও প্রখ্যাত লেখক জনাব খন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াস ছিলেন এর সদস্য-সচিব। পরের বছর এই কমিটি আরো সংগঠিত হয়ে তাঁকে সভাপতি ও জনাব ইলিয়াসকে সাধারণ সম্পাদক করে ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ’-এর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে। দেশে স্বৈরাচারী সরকারের নিষ্ঠুর দমননীতির কারণে এই কমিটি কর্তৃক ইউরোপে বঙ্গবন্ধু পরিষদের শাখার মাধ্যমে ১৯৭৯ ও ১৯৮০ সালে বিভিন্ন দেশের বুদ্ধিজীবী, অধ্যাপক, রাজনৈতিক কর্মী, পার্লামেন্ট সদস্য ও আইনজীবীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সর্বপ্রথম সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার আন্তর্জাতিক তদন্ত ও বিচার দাবি করা হয়। জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে এই অসীম সাহসিকতাপূর্ণ কাজের জন্য বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাথে জড়িত বুদ্ধিজীবীদের, বিশেষ করে এর প্রথম সভাপতির প্রতি জাতি কৃতজ্ঞ।
এই সাহসিকতার জন্য তাঁকে স্বৈরাচারী ও খুনি সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের ক্রোধের শিকার হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছিল। এছাড়াও সরকার তাঁকে নানাভাবে হেনস্তা ও অপমানিত করে। কিন্তু তাতে হতোদ্যম না হয়ে তাঁর সমসাময়িককালে তিনি মৃত্যুর আগে পর্যন্ত জাতির জনকের প্রতি যে সম্মান ও দায়িত্ববোধ দেখিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তিনি যে বলিষ্ঠভাবে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে তার উদাহরণ তখন খুব বেশি ছিল না।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, স্বপ্ন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন হিসেবে বোস প্রফেসর ড. আবদুল মতিন চৌধুরীর প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু পরিষদে পর্যায়ক্রমে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসেন, কিংবদন্তীসম বিচারপতি কে এম সোবহান, জননী সাহসিকা কবি বেগম সুফিয়া কামাল, বাংলাদেশের বিবেকরূপী কণ্ঠস্বর অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রাণপুরুষ, বিশিষ্ট কলামিস্ট ও সৎ রাজনীতিবিদ ডা. এস এ মালেক ,তাঁরা একের পর এক এই পরিষদের সভাপতি হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন ,তাঁদের সবার অবদানের কথা জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। আমাদের সম্প্রতি প্রয়াত সভাপতি ডা. এস এ মালেক দীর্ঘ চার দশক ধরে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিষদকে আগলে রেখেছেন। এত দীর্ঘ সময় পরেও আমাদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বোস প্রফেসর ড. আবদুল মতিন চৌধুরীর দেখিয়ে দেয়া পথে আমরা সবাই হেঁটে চলেছি।
আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্য ও বন্ধু-সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।