04/21/2025 বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ স্বাধীনতা দিয়েছেন আর শেখ হাসিনা স্বাধীনতার সুফল দেখিয়েছেন: এম জে আকবর
odhikar patra
১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০২:০৪
রবিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের কাজী জহুর হোসেন চৌধুরী হলে "শেখ হাসিনা ও ঘুরে দাঁড়ানোর বাংলাদেশ’" গতকাল এই বইয়ের ষষ্ঠ সংস্করণের প্রকাশনা অনুষ্ঠিত হয় উক্ত অনুসঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও প্রখ্যাত সাংবাদিক এম জে আকবর। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. অহিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান লিটু । উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
অনুষ্ঠানে ‘শেখ হাসিনা ও ঘুরে দাঁড়ানোর বাংলাদেশ’ বইটির সারাংশ পড়ে শুনান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা ডিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিন্নাত হুদা।
ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও প্রখ্যাত সাংবাদিক এম জে আকবর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলেছেন। গত ১৫ বছরে সবক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশের ব্যাপক পরিবর্তন করেছেন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ এই উপমহাদেশের অন্যান্য রাষ্ট্রের চেয়েও উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে অনেক বেশি এগিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধু প্রথম বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন, আর শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার স্বাধীন করেছেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম জে আকবর এসব কথা বলেন।
রাজনীতিক এম জে আকবর বলেন, ভারত শুধু বাংলাদেশকে স্বাধীন করতেই সহযোগিতা করেনি, বর্তমান বাংলাদেশের উন্নয়নেও সহযোগিতা করেছে। বঙ্গবন্ধু প্রথম বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন, আর শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার স্বাধীন করেছেন। বাংলাদেশকে শেখ হাসিনা শুধু একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবেই গড়ে তোলেননি, একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবেও গড়ে তুলেছেন। শুধু ভালো পোষাক পড়লেই আধুনিক হওয়া যায় না। আধুনিকায়নের জন্য গণতন্ত্র, মানুষের স্বাধীনতা, ধর্মনিরপেক্ষতা ও লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা সবচেয়ে জরুরি। শেখ হাসিনা এই সবকিছু নিশ্চিত করে বাংলাদেশকে একটি সতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের গণতন্ত্র অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিল। একনায়কতন্ত্রের অন্ধকারে ঢেকে গিয়েছিল। শেখ হাসিনা এসে এই জাতিকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিয়েছেন। এই আধুনিকায়নের সুফল এই জাতি পাবে। এ দেশের মানুষ এই ঐতিহাসিক পরিবর্তনের স্বাক্ষী।
এম জে আকবর আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ইন্দিরা গান্ধী এই নাম দুটি বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত। এই দুটি নামের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জানাই। শেখ হাসিনা এই জাতিকে যা দিয়েছেন, তার গুরুত্ব আমরা এখনো বুঝতে পারছি না, তবে এক সময় সবাই বুঝবে। শেখ হাসিনা যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করেছেন তা দিয়ে শুধু এই একটি না, অসংখ্য বই লেখা যাবে। তার বাবা ইতিহাস গড়েছিলেন। আর তিনি বাংলাদেশকে সবদিক থেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর উদ্বৃতি দিয়ে এম জে আকবর বলেন, নেতাজী বলেছিলেন- স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়, এনে দেয়া যায় না। স্বাধীনতা অর্জনের পর জাতি জানে না এই স্বাধীনতা দিয়ে কী করতে হয়। শেখ হাসিনা স্বাধীনতার সুফল দেখিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ১০ ট্রাক অস্ত্র, জেএমবির উত্থান, গণতান্ত্রিক ধারা বাঁধাগ্রস্ত হওয়ার পর শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ও দূরদর্শিতায় বাংলাদেশ একটি অন্ধকার বাঁক থেকে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এখন বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে রয়েছে। এক হাজার ২৭০টি সংবাদপত্র প্রকাশিত হচ্ছে। ৩০টি টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে, ১৪ কোটি মানুষের হাতে রয়েছে মোবাইল ফোন। এসব সাফল্য অনেক দেশের তুলনায় অনেক অনেক বেশি। আগামী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ আরো একটি বাঁক নেবে, তখন দেখা যাবে বাংলাদেশ কোথায় গিয়ে ঘুরে দাঁড়াবে।
শ্যামল দত্ত বলেন, বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যে দেশের যে কোনো জায়গা থেকে এক মুঠো মাটি হাতে নিলে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের রক্ত পাওয়া যাবে। এত রক্তের বিনিময়ে আর কোনো দেশের জন্ম হয়নি। বাংলাদেশ একমাত্র দেশ- যে দেশের মুক্তির জন্য অন্য একটি দেশের সেনাসদস্যরাও জীবন বিসর্জন দিয়েছেন।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয় তুলে ধরে শ্যামল দত্ত বলেন, অনেক দেশে যুদ্ধে সহযোগিতার পর এখনো বিদেশি সেনাবাহিনী থেকে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র কিছুদিন পর ইন্দিরা গান্ধী ভারতীয় সৈন্য সরিয়ে নিয়ে গেছেন। শুধুমাত্র বন্ধুত্বপূর্ণ ও সুসম্পর্কের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এখনো অটুট রয়েছে। সমুদ্রসীমা, স্থল সীমান্তসহ সব ধরনের সমস্যা নিরসন হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের চমৎকার সম্পর্কের কারণে।
সভাপতির বক্তব্যে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. অহিদুজ্জামান বলেন, আজ বিশ্ব আসরে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। এই দেশকে সন্ত্রাসীদের লীলাভূমিতে পরিণত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। শেখ হাসিনা জঙ্গীবাদ, মৌলবাদ, সন্ত্রাসবাদ দূর করেছেন। উপমহাদেশ এবং বিশ্বশান্তি রক্ষা ও নিরাপত্তায় বড় অবদান রেখেছেন। শেখ হাসিনাকে এ দেশের উন্নয়ন ও শান্তি রক্ষার জন্য আবারো দরকার। আরো বক্তব্য রাখেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. বদিউজ্জামান ও বইটির লেখক শামীম আহমেদ।