05/04/2025 পাঠ্য বইয়ে গনহত্যার পাঠ দেওয়ার জন্য আবেদন
Mahbubur Rohman Polash
১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ১১:০৬
মুক্তিযুদ্ধকালীন যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে তরুণদের কাজে লাগাতে হবে। স্কুল-কলেজের শিক্ষাক্রমে ধাপে ধাপে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। উচ্চশিক্ষায় গণহত্যা–বিষয়ক গবেষণায় জোর দিতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ আয়োজিত ‘জাতিহত্যা ও গণসহিংসতা’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে দুদিনব্যাপী এই সম্মেলন শুরু হয়েছে।
প্রথম দিন ‘জেনোসাইড: বাংলাদেশ অ্যান্ড দ্য ওয়ার্ল্ড’, ‘মেমোরি অব জেনোসাইড অ্যান্ড ভায়োলেন্স’ ও ‘স্টেট, সোসাইটি অ্যান্ড ভায়োলেন্স’ শীর্ষক তিনটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এগুলোতে যথাক্রমে সংবিধানপ্রণেতা ড. কামাল হোসেন, ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন সভাপতিত্ব করেন।
আজ শুক্রবার সকাল থেকে ‘দ্য পলিটিকস অব জেনোসাইড অ্যান্ড ট্রানজিশনাল জাস্টিস’, ‘প্রিভেন্টিং ভায়োলেন্ট এক্সিট্রিমিজম অ্যান্ড রেডিকেলাইজেশন’, ‘জেনোসাইড অন দ্য রোহিঙ্গা মাইনরিটি’ শিরোনামে তিনটি অধিবেশন হবে। দেশ-বিদেশের অন্তত ২০ জন শিক্ষক-গবেষক-আইনজ্ঞ-রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিক সেশনগুলোতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করছেন। ‘ঢাকা ঘোষণা’র মধ্য দিয়ে সম্মেলন শেষ হবে। সম্মেলনের শুরুতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের ‘সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব ডেভেলপিং সোসাইটিজ’–এর সাবেক অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আশিস নন্দী। তিনি বলেন, তরুণদের বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সম্পর্কে জ্ঞান দিতে একটি রূপরেখা করতে হবে। শুধু উচ্চশিক্ষায় নয়, স্কুল-কলেজ পর্যায় থেকেই গণহত্যা–বিষয়ক পাঠক্রম প্রণয়ন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের বয়স উপযোগী করে পাঠদান প্রক্রিয়া নির্ধারণ করতে হবে। বিষয়গুলো জানা থাকলে তরুণেরাই একদিন গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করবেন। আশিস নন্দী আঠারো ও উনিশ শতকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণহত্যার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমার দেখা সবচেয়ে নৃশংসতম গণহত্যাটি ১৯৭১ সালে ঘটেছে। ওই সময় যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, বাংলাদেশ সরকার তাদের বিচারের ব্যবস্থা করেছে। তবে গণহত্যার দায়ে পাকিস্তানকেও একদিন বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি এখনো নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বিভিন্ন জায়গা থেকে বাধা আসছে। সেসব বাধা উপেক্ষা করে ইতিহাসের সত্যটাকে সামনে তুলে ধরতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে ইতিহাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। গবেষণা খাতকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করতে হবে, এর জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক কাঠামো প্রণয়ন করতে হবে।
উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান। তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনসহ সব গণহত্যা ও সহিংসতার বিরুদ্ধে বিশ্বজনমত গড়তে সমন্বিত গবেষণা কার্যক্রমের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
স্বাগত বক্তব্যে আয়োজক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য গবেষণাভিত্তিক কার্যক্রমকে জোরদার করতে এই সম্মেলন।