04/20/2025 ১৪ বছরেও শুরু হয়নি মুক্তিযোদ্ধা সুরুজ হত্যার বিচার কার্য
Mahbubur Rohman Polash
২২ ডিসেম্বর ২০১৭ ২২:১৪
১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো শুরু হয়নি লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সামসুল ইসলাম সুরুজ হত্যা কান্ডের বিচার কার্য। এর আগে ২০০৩ সালের ২১ ডিসেম্বর দিনগত রাতে উপজেলার কমলাবাড়ি ইউনিয়নের চড়িতাবাড়ি এলাকায় নিজ বাড়ি ফিরার পথে তাকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে দূর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় সে সময় তার ছোট ভাই বর্তমান আদিতমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শওকত আলী বাদি হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় একটি হত্যা মামলা (১১/২০১ এবং জিআর ২০১/০৩(অ)) দায়ের করেন। এদিকে বিচার কার্য কয়েক দফায় পিছানোর পর আগামী ৫ মার্চ বাদির জবানবন্দির মধ্য দিয়ে বিচার কার্য শুরু হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে। মুক্তিযোদ্ধা সামসুল ইসলাম সুরুজ লালমনিরহাট জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। এছাড়া কমলাবাড়ি ইউনিয়নের টানা ৬ বারের ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। শুধু তাই নয় লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসন থেকে আ’লীগের নৌকা প্রতিক নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আংশ গ্রহন করেছিলেন। মামলার বিবরনে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা সামসুল ইসলাম সুরুজকে ২০০৩ সালের ২১ ডিসেম্বর দিনগত রাতে নিজ এলাকায় বাড়ি ফিরার পথে দূর্বত্তরা নৃশংস ভাবে তাকে খুন করেন। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই বর্তমান উপজেলা আ’লীগের সভাপতি শওকত আলী বাদি হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আরো বলা হয়, উপজেলার কমলাবাড়ি ইউনিয়নের চড়িতাবাড়ি এলাকার মৃত কিসমত আলীর ছেলে মোহাম্মদ আলী ও আব্দুল খালেক সরকারের ছেলে আব্দুল মান্নান পূর্ব-শত্রুতার জেড়ে দলবল নিয়ে সুযোগ বুঝে মুক্তিযোদ্ধা সামসুল ইসলাম সুুরুজ বাড়ি ফেরার পথে ধারালো অস্ত্রে কুপিয়ে হত্যা করে। এছাড়া এই হত্যা মামলার তদন্তের দ্বায়িত্ব পান সিআইডি। তারা তদন্ত করে আরো ৪ জনকে আসামী করে মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্য গঠন করেন। এদিকে দলের এ ত্যাগী নেতার মৃত্যুর কয়েক দিনের মধ্যে আ’লীগ সভাপতি প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ছুটে আসেন। পরিবারকে শান্তনা-সমবেদনার পাশাপাশি খুনিদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে উপযুক্ত শাস্তির আশ্বাস দেন। এমনকি সুরুজের বড় ছেলে ইমরুল কায়েস ফারুকের লেখাপড়া থেকে সবকিছুর দায়িত্বও তিনি নেন। শুধু তাই নয় নিজ বাসায় রেখে লেখাপড়া শিখিয়ে তাকে বড় করেন শেখ হাসিনা। এ মামলার বিচার কার্য শুরু না হলেও এরই মধ্যে মামলার ২ নং আসামী আব্দুল মান্নান ও ১৭ নং আসামী তোতা মিয়ার মৃত্যু হয়। আর বাকী আসামীরা রয়েছেন জামিনে। বড় ছেলে ইমরুল কায়েস ফারুকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, বিচার কার্য শুরু হচ্ছে না। এতে করে অনেক আলামত নষ্ট হতে বসেছে এবং স্বাক্ষীদের কেউ কেউ মারাও গেছেন। কেউ আবার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। যা মামলার বিচার কার্যে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে বলে তিনি মনে করেন। এমনকি এজাহারভুক্ত দুই জন আসামী মারাও গেছেন। তবে আগামী দিনে বিচার কার্য শুরু হতে পারে বলে তারা আশাবাদী। এ বিষয়ে লালমনিরহাট আদালতের সরকারী আইন কৌশুলী (পিপি) অ্যাডভোকেট আকমল হোসেন জানান, বিচারকের বদলি জনিত কারনে কয়েক দফায় দিনক্ষণ পিছালেও আগামী ৫ মার্চ বিচার কার্য শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এ দিন বাদির জবানবন্দির মধ্য দিয়ে বিচার কার্য শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
হাসান মাহমুদ। জেলা প্রতিনিধি, লালমনিরহাট।