04/10/2025 রাজস্ব বাড়াতে এনবিআরকে কম্প্রিহেনসিভ অটোমেশনে করতে হবে
odhikarpatra
২৭ জানুয়ারী ২০২৫ ২৩:৪৯
রাজস্ব বাড়াতে এনবিআর'কে কম্প্রিহেনসিভ অটোমেশনে করতে হবে। তাহলেই এনবিআর নিয়ে যে সমস্যাগুলো আছে তার ৬০ ভাগ সমাধান হয়ে যাবে।
আজ সোমবার কারওয়ান বাজারে সিএ ভবনে আইসিএবি এবং ইআরফের সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার কমিটির এক গোলটেবিল বৈঠকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংস্কার কমিটির উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ এ কথা বলেন।
ড. মজিদ বলেন, রাজস্ব আদায়ের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আরো ক্ষমতা দিতে ৫৩ বছরের আগের আইন সংস্কার করতে হবে। এ জন্য অভিজ্ঞ ও দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের দিয়ে একটি কমিটি করে দেওয়া উচিৎ।
ইনিস্টিটিউট অব চাটার্ড একাউন্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) সভাপতি মারিয়া হাওলাদারের সভাপতিত্বে এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশিষ বোসের পরিচালনায় গোলটেবিল আলোচনায় অন্যদের মধ্যে এনবিআর সংস্কার কমিটির উপদেষ্টা কমিটির সদস্য এবং সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ, এনবিআরের সাবেক সদস্য মো. ফরিদ উদ্দিন, এনবিআর সংস্কার কমিটির উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমিনুর রহমান, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলা তৌফিকুল ইসলাম খান, এফবিসিসিআই’র উপদেষ্টা হাফিজুর রহমান, পলিসি এক্সেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মো. মাসরুর রিয়াজ, আইসিএবি’র সাবেক সভাপতি জামাল উদ্দিন আহমেদ, ইআরএফ প্রেসিডেন্ট দৌলত আক্তার মালা বক্তব্য দেন।
করপোরেট সুশাসনে জন্য সিএ ফার্মগুলোর অনেক ভুমিকা আছে উল্লেখ করে মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, তারা সঠিকভাবে কাজ করলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠাগুলোর খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। ট্যাক্স-জিডিপির রেশিও বাড়তো। এখন প্রশ্ন উঠেছে তারা কি অডিট করেছেন, প্রধান হিসাব নিয়ন্ত্রকের অফিসের কর্মকর্তারাই বা কী করেছেন।
ড. নাসির উদ্দিন বলেন, কর্পোরেট গভর্নেন্স না হলে ট্যাক্স আদায় হবে কীভাবে? তিনি ট্যাক্স জিডিপি রেশিও বাড়াতে বিজনেস ফ্রেন্ডলি ট্যাক্স পলিসির কথা বলেন। এছাড়া যে পলিসিই নেওয়া হোক না কেন, তা যেন চলমান থাকে সেই নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
সিপিডির তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, এনবিআরের দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার না-কি কিছু কিছু বিষয় সংশোধন করবো। না-কি নতুন কিছু করবো, সেটা ভাবতে হবে। যে নীতিই নেয়া হোক না কেন তা স্থায়ী হতে হবে।
তিনি এনবিআর ডিজিটালাইজড না হলে ট্যাক্স ফাঁকি রোধ করা সম্ভব হবে না উল্লেখ করে বলেন, করপোরেট ট্যাক্স ফাঁকির জন্য চ্যাটার্ড একাউন্টেন্ডরাও দায়ী, এটা কেউ বলেন না। এ বিষয়টি আমাদের স্বীকার করতে হবে। ট্যাক্স জিডিপি রেশিও বাড়াতে আমাদের সবাইকে দ্বায়বদ্ধতার জায়গায় আসতে হবে। আমাদেরকে এনবিআরকে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশনে আসতে হবে। তা না হলে ট্যাক্স ফাঁকি, অর্থ পাচার দুর্নীতি অনিয়ম ঠেকানো যাবে না।
তিনি বলেন, আমরা কল্যাণ রাষ্ট্রের কথা বলি, অথচ ট্যাক্স সিস্টেম কল্যাণ রাষ্ট্রের মতো করতে রাজি হই না। এ মানসিকতা থেকেও আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
মাশরুর রিয়াজ বলেন, জনগণ ট্যাক্স দিতে চায়, কিন্তু নানাবিধ ঝামেলার কারণে তা সম্ভব হয় না। এ জন্য করদাতাদের জন্য ইউনিক একটি নম্বর করা যেতে পারে। এছাড়া জনগণ কেন ট্যাক্স-ভ্যাট দিচ্ছেন এবং এই করের ব্যবহারটা কোথায় করা হবে, তাও তাদেরকে জানার ব্যবস্থা করতে হবে। এটা দিয়ে কী হবে? তাহলে ট্যাক্স আদায়ের হার বাড়বে। এজন্য ট্যাক্স আদায় সিস্টেমকে ‘ইন্টিগ্রেটেড ডিজিটালাইজড’ করার সুপারিশ করেন তিনি।
জামাল উদ্দিন বলেন, ট্যাক্স আদায় বাড়াতে না পারলে কোন গতি থাকবে না। ট্যাক্স আদায়ে এশিয়ার অনেক দেশ মঙ্গোলিয়া, কম্বোডিয়া, থাই্যলান্ড, মালয়েশিয়া শতভাগ ডিজিটালাইজেশনে গেছে। আর আমরা মাত্র ১৩ ভাগে ডিজিটালাইজেশনে পড়ে আছি। এর থেকে আমাদের বেরিয়ে এসে শতভাগ ডিজিটালাইজেশন করতে পারলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।