10/18/2025 চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের মিছিল : পুলিশের মামলায় নগর আওয়ামী লীগ সভাপতিসহ আসামি ১২
odhikarpatra
২৭ March ২০২৫ ২০:৪৯
চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারের চট্টেশ্বরী মোড়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের মিছিলের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৭৬ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাত ৫০ জনসহ মোট আসামি ১২৬ জন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) চকবাজার থানার ওসি মো. জাহেদুল কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘চট্টেশ্বরী এলাকায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের মিছিলের ঘটনায় ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় ৫০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে বুধবার রাতে নগরের চকবাজার থানায় মামলাটি করেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক। যদিও বিষয়টি জানাজানি হয়েছে আজ (বৃহস্পতিবার)। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ‘সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক তথ্য সম্প্রচার, রাষ্ট্রের ক্ষতিসাধন ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন’ করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, ১৫ নম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন, সরাইপাড়া ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোরশেদ আক্তার চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য নওশাদ মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য গিয়াস উদ্দিন সুজন, বাগমনিরাম ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আজিম, সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম বাবু, কোতোয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহাম্মদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক সাইফুল আলম লিমন, নগর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. সাজিদ, দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, নগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম সামদানি জনি, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম প্রমুখ।
এর আগে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটের দিকে চট্টেশ্বরী মোড় এলাকায় মিছিল করেন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি কালি মন্দির ঘেঁষে এম এম আলী সড়কের দিকে চলে যায়। মিছিলটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
এজাহারে মামলার বাদী উপ-পরিদর্শক এনামুল হক উল্লেখ করেছেন, গত ২৫ মার্চ সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটের দিকে গোলপাহাড় মোড়ে অবস্থানকালে তিনি বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে সংবাদ পান, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ আওয়ামী লীগ ও দলের অঙ্গসংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে লাঠিসোঁটা, ইট-পাটকেল নিয়ে চট্টেশ্বরী মোড় থেকে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগানসহ মিছিল করছে। সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা কৌশলে অলিগলি দিয়ে দিক-বেদিক দৌড়ে পালিয়ে যায়। আসামিরা ছাত্রলীগের নামে বিভিন্ন স্লোগান ও সরকারবিরোধী উসকানিমূলক স্লোগান দিয়ে হাতে লাঠিসোঁটা, ইট-পাটকেল নিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছিল। ঘটনাস্থল থেকে আসামিদের ফেলে যাওয়া ১০টি কাঠের লাঠি এবং ১৮টি ইটের ভাঙা টুকরা জব্দ করেন তিনি।
পরে বাকলিয়া থানার নতুন ব্রিজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তিনি জানতে পারেন, পলাতক এবং অজ্ঞাতনামা ৪০ থেকে ৫০ জন সরকারের নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কাজ পরিচালনা করতে ঘটনাস্থল, আশেপাশে অবস্থান ও সমর্থনপূর্বক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশে-বিদেশে থেকে সহায়তা, অর্থ প্রদান, বিভ্রান্তিমূলক তথ্য সম্প্রচার ও আসামিদের আশ্রয়দানসহ বিভিন্নভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতে প্ররোচিত করেছে।