হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

আজ শেরপুরের মধুটিলা ইকোপার্কে হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘মানুষ হাতির আবাসস্থল দখল করে নিচ্ছে, ফলে হাতির খাবার কমে যাচ্ছে। ইউক্যালিপটাসসহ বিদেশি গাছ না লাগিয়ে আমাদের হাতির উপযোগী দেশীয় প্রজাতির গাছ লাগাতে হবে।’

উপদেষ্টা আরো বলেন, সরকার জনগণের প্রতিপক্ষ নয়, বরং সহায়ক। প্রাকৃতিক বন ধ্বংস হলে আমরাও নিরাপদ থাকবো না। হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগকে নির্দেশ দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী।

সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান, কেন্দ্রীয় বন অঞ্চলের বন সংরক্ষক এ এস এম জহির উদ্দিন আকন, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. ছানাউল্লাহ পাটওয়ারী, বিজিবি কমান্ডার লে. কর্নেল তানভির হোসেন মজুমদার, ইআরটির সদস্য ইমতিয়াজ আলী ও মোহাম্মদ হাসমত আলী।

অনুষ্ঠানে হাতির আক্রমণে নিহত দুই পরিবারকে মোট ৬ লাখ টাকা ও ফসল ঘরবাড়ির ক্ষতিপূরণ বাবদ ১৫ পরিবারকে ৩ লাখ ২৭ হাজার টাকার চেক তুলে দেন উপদেষ্টা।

এছাড়া এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্যদের মাঝে বাইনোকুলার, টর্চ লাইট, হ্যান্ডমাইকসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়।

এর আগে উপদেষ্টা শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার দাওধারা গারো পাহাড় পর্যটন কেন্দ্র এবং মধুটিলা রেঞ্জের ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাগান প্রকল্প পরিদর্শন করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত হাতির আক্রমণে নিহত ৪৫ জনের পরিবারকে মোট ৯১ লাখ টাকা, আহত ৩৪ জনকে ১০ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং ৯০৬ জনের ফসল ও ঘরবাড়ি ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ কোটি ৬৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। মোট ক্ষতিগ্রস্ত ৯৮৫ জনকে দেয়া হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ ২৫ হাজার টাকা।