08/29/2025 ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে “মা ও শিশু”-এর প্রতি অবহেলা
odhikarpatra
২৮ আগস্ট ২০২৫ ১৭:২৬
-বিশেষ প্রতিবেদন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের সামনে অযত্নে অবহেলায় পরে আছে একটি শিল্প, একটি বিখ্যাত ভাস্কর্য।অনেকটা বেওয়ারিশের মতো পড়ে থাকা “মা ও শিশু” নামক ছোট ভাস্কর্যটি যথাযথ সংস্কারের মাধ্যমে সংরক্ষণের করা জরুরি। অমূল্য এই ভাস্কর্যটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কর্তৃপক্ষের উদ্যোগী হওয়া দরকার। অনিন্দ্য সুন্দর এই ভাস্কর্যটির বাংলাদেশের আধুনিক ভাস্কর্য কলার অন্যতম পথিকৃৎ ভাস্কর নভেরা আহমেদ এর সৃষ্টি। অনেক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, “এই ভাস্কর্যটি অরক্ষিত আর অযত্ন অবহেলায় ফেলে না রেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হলেও সংরক্ষণ করা জরুরি।” এর কারণ বাংলাদেশে আধুনিক ভাস্কর্য শিল্পের সূচনায় নভেরা আহমেদ ছিল অগ্রগামী। তিনি শুধু ভাস্কর্য নির্মাণ করেননি, বরং শিল্পকে সমাজ ও ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন। মহান ভাষা আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনারের নকশায় তাঁর অবদান বাংলাদেশ ইতিহাসে এক অমর অধ্যায়। এ কাজ তাঁকে জাতীয় শিল্প-ঐতিহ্যের অংশ করে তুলেছে। স্বাধীনতার আগেকার সময়েই তিনি বাংলাদেশের একজন নারী ভাস্কর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। যা ছিল পরবর্তী প্রজন্মের নারী শিল্পীদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁর অবদান শুধু শিল্পে নয়, নারীর মুক্তি ও সৃজনশীলতার বিকাশেও সমান গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়। নভেরা আহমেদের ভাস্কর্যগুলো আজও বাংলাদেশের শিল্প-ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও জনসাধারণের কাছে অপিরিচত। তাঁর ভাস্কর্য রক্ষায় এবং প্রদর্শনে আরও উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন, যাতে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিল্প-প্রেম ও ইতিহাসের সাথে পরিচিত হতে পারে।
ভাস্কর নভেরা আহমেদ ২৯ মার্চ ১৯৩৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে লন্ডনের Camberwell School of Art and Crafts থেকে ভাস্কর্য বিষয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি ভাস্কর হামিদুর রহমানের সঙ্গে মিলে শহীদ মিনারের নকশায় অবদান রাখেন। বাংলাদেশে যে সম্মান ও স্বীকৃতি প্রাপ্য ছিলেন, তা এই মহান শিল্পি তাঁর জীবদ্দশায় পাননি। সেই অভিমান নিয়েই দেশ ছেড়েছিলেন।ধীরে ধীরে দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন এবং ফ্রান্সে নির্জন ও নিঃসঙ্গ জীবনযাপন শুরু করেন। বাংলাদেশ সরকার ২০১০ সালে তাঁকে একুশে পদক প্রদান করে সম্মানিত করে। ২০১৫ সালের ৬ মে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে ফ্রান্সেই সমাহিত করা হয়।
- মো. সাইদুর রহমান বাবু, স্পেশাল করোসপন্ডেন্টস, অধিকারপত্র