09/01/2025 জাতিসংঘ অধিবেশনে প্যালেস্টাইনি প্রতিনিধি অংশগ্রহণ অনিশ্চিত: যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রদানে অস্বীকৃতি
odhikarpatra
৩০ আগস্ট ২০২৫ ১৯:২২
আগামী সেপ্টেম্বরের জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিতে প্যালেস্টাইন কর্তৃপক্ষ (PA) ও প্যালেস্টাইন মুক্তি সংস্থা (PLO)-এর প্রতিনিধিদের ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর নির্দেশে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, প্যালেস্টাইনি কর্তৃপক্ষ সন্ত্রাসবাদ প্রত্যাখ্যান করেনি এবং শান্তি প্রক্রিয়ার বদলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একতরফা পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে কর্মরত স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তারা এই সিদ্ধান্তের বাইরে থাকবেন। ১৯৮৮ সালে ইয়াসির আরাফাতকে ভিসা প্রত্যাখ্যানের পর এটিই প্রথমবার কোনো প্যালেস্টাইনি প্রতিনিধি জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশগ্রহণে পুরোপুরি বাধার মুখে পড়ল। নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে প্রতিবছরই বিশ্বনেতারা একত্রিত হন। কিন্তু এ বছর প্যালেস্টাইনি নেতারা সেই অধিবেশনে প্রবেশাধিকারই পাচ্ছেন না। যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভিসা বাতিল করে দিয়েছে যা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন এক অচলাবস্থার ইঙ্গিত। জাতিসংঘ সদর দপ্তরের ‘হেডকোয়ার্টার্স অ্যাগ্রিমেন্ট অনুযায়ী, নিউইয়র্কে স্থায়ী মিশনে কর্মরত কর্মকর্তাদের প্রবেশাধিকার অক্ষুণ্ণ থাকছে। তবে শীর্ষ নেতাদের অংশগ্রহণ আটকানো UNGA’র ইতিহাসে অত্যন্ত বিরল ঘটনা।
প্যালেস্টাইনের প্রতিক্রিয়া
প্যালেস্টাইনি নেতৃত্ব বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ তাদের কণ্ঠস্বর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রুদ্ধ করার চেষ্টা। তারা এটিকে অন্যায্য এবং রাজনৈতিক নিপীড়ন হিসেবে দেখছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
সম্প্রতি ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও কানাডাসহ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত তাদের অবস্থানের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। ইউরোপের কিছু কূটনীতিক সতর্ক করে বলেছেন, এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
ইসরায়েলের অবস্থান
ইসরায়েল এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের দাবি, প্যালেস্টাইন কর্তৃপক্ষ ও মুক্তি সংস্থা এখনো “সন্ত্রাসবাদকে প্রত্যাখ্যান করেনি” এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েলের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত শুধু প্যালেস্টাইনি প্রতিনিধিদের জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশগ্রহণের অধিকার হরণই নয়, বরং আন্তর্জাতিক কূটনীতির মূল নীতিকেও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। একদিকে এটি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর অবস্থানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি করছে। অন্যদিকে প্যালেস্টাইনি জনগণের ক্ষোভ আরও উসকে দিচ্ছে। ইতিহাস বলে জাতিসংঘের মঞ্চ থেকে কোনো পক্ষের কণ্ঠস্বর বাদ দেওয়া সমাধান নয়, বরং আরও বিভাজন সৃষ্টি করে। তাই বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ বিশ্ব রাজনীতির জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না; বরং শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
- মো. সাইদুর রহমান বাবু, স্পেশাল করোসপন্ডেন্টস