09/21/2025 সুরা আল-বাকারাহর প্রথম তিন আয়াতের বিশুদ্ধ অর্থ ও প্রামাণ্য তাফসির
odhikarpatra
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:০৫
অধিকারপত্র ডটকম :
ঢাকা, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
পবিত্র কোরআনের দ্বিতীয় সূরা সুরা আল-বাকারাহ ইসলামী জীবনযাপনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা হিসেবে পরিচিত। ইসলামী বিশেষজ্ঞরা এ সুরার প্রথম তিন আয়াতের বিশুদ্ধ অর্থ এবং প্রামাণ্য তাফসির তুলে ধরেছেন। তাফসির ইবনে কাসির, তাফসিরে সা’দি -এর রেফারেন্স অনুযায়ী এ তিন আয়াত মুসলিম উম্মাহকে ঈমান, ইবাদত এবং সমাজিক দায়িত্ববোধের সঠিক দিশা দেখায়।
# আয়াত ১:
"الم" (আলিফ-লাম-মিম)
## তাফসির ইবনে কাসির: এগুলোকে বলা হয় হুরুফে মুকাত্তা’আত। এর অর্থ আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। এর দ্বারা আল্লাহ তায়ালা কোরআনের অলৌকিকত্ব এবং এর ভাষাগত মহিমার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
## তাফসিরে সা’দি: এ অক্ষরগুলো প্রমাণ করে যে, কোরআন এমন অক্ষর দ্বারা গঠিত যা আরবদের কাছে পরিচিত, কিন্তু তারা এর সমতুল্য কিছু আনতে অক্ষম। এটি কোরআনের চ্যালেঞ্জ স্বরূপ।
## আয়াত ২:
"ذَٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ فِيهِ ۛ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ"
বাংলা অর্থ: "এ সেই কিতাব, এতে কোনো সন্দেহ নেই; এটি মুত্তাকিদের জন্য হিদায়াত।"
##তাফসির ইবনে কাসির: এখানে “কিতাব” দ্বারা কোরআনকে বুঝানো হয়েছে। এর মধ্যে কোনো সন্দেহ বা বিরোধ নেই। এটি আল্লাহভীরু মানুষদের জন্য পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশ।
## তাফসিরে সা’দি: এখানে বোঝানো হয়েছে যে, যে ব্যক্তি সত্যিকার অর্থে আল্লাহকে ভয় করে এবং হিদায়াত গ্রহণে প্রস্তুত, কোরআন তার জন্য আলোর পথ হয়ে যায়।
### আয়াত ৩:
"الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ"
বাংলা অর্থ: "যারা অদৃশ্যে ঈমান আনে, সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে।"
## তাফসির ইবনে কাসির: এখানে ‘গায়েব’ বলতে আল্লাহর অস্তিত্ব, ফেরেশতা, জান্নাত-জাহান্নাম, কিয়ামত, তাকদির ইত্যাদি অদৃশ্য বিষয়গুলো বোঝানো হয়েছে। মুত্তাকিরা এসব বিষয়ে দৃঢ় ঈমান রাখে।
## তাফসিরে সা’দি: সালাত কায়েম করার অর্থ শুধু নামাজ পড়া নয়, বরং তা নিয়মিত, সময়মতো, খুশু-খুজু সহকারে আদায় করা। আর ইনফাক মানে হলো নিজের উপার্জন থেকে জাকাত, সদকা এবং সৎ কাজে ব্যয় করা।
বিশেষজ্ঞ মতামত:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান বলেন,
“সুরা আল-বাকারাহর প্রথম আয়াতগুলো মুসলিম জীবনের রূপরেখা স্পষ্ট করে দেয়। এগুলো শেখায়—সন্দেহমুক্ত ঈমান, নিয়মিত ইবাদত এবং সমাজে দান-সদকা ও দায়িত্ববোধের মাধ্যমে একটি আদর্শ সমাজ গঠন সম্ভব।”
#### ভূলত্রুটিগুলো দয়া করে শুধরে দেওয়ার জন্য অনুরোধ