10/18/2025 রাগাসার রুদ্ররূপে দক্ষিণ চীন-তাইওয়ান বিপর্যস্ত: প্রকৃতির ক্রোধে মানুষ অসহায়
odhikarpatra
২৪ September ২০২৫ ২৩:৪২
সুপার টাইফুন রাগাসার ধ্বংসলীলায় বিপর্যস্ত দক্ষিণ চীন ও তাইওয়ান। অন্তত ১৪ জন নিহত, আহত শতাধিক, উপকূল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ২০ লাখ মানুষ। ভেঙে পড়েছে ঘরবাড়ি, বন্ধ হয়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। প্রকৃতির এই রুদ্ররূপ ঘিরে আশঙ্কা আরও বন্যার।
প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা যখন রুদ্ররূপে দেখা দেয়, তখন মানুষের সভ্যতা, প্রযুক্তি আর আধুনিকতার সব গর্ব যেন মুহূর্তেই মুছে যায়। সুপার টাইফুন রাগাসা ঠিক তেমন এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়েছে দক্ষিণ চীন ও তাইওয়ানে। মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হওয়া ঝড় যেন পুরো অঞ্চলকে এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে।
তাইওয়ানের জরুরি সংস্থা জানিয়েছে, দ্বীপটিতে কমপক্ষে ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন অন্তত দুই শতাধিক মানুষ। পাহাড়ি ঢলে ভূমিধস নেমেছে, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে শহর ও গ্রাম। উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে স্থবির হয়ে পড়েছে আকাশ ও জলপথ। বিমানবন্দরে হাজারো যাত্রী আটকা, আর সমুদ্রপথে নৌযান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ।
চীনের উপকূলীয় প্রদেশগুলোতে রাগাসার তাণ্ডব ছিল আরও ভয়ংকর। গুয়াংডং-এ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে ১২ লাখ মানুষ। ফুজিয়ান ও হাইনান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আরও প্রায় ৮ লাখ মানুষকে। মুষলধারে বৃষ্টি, ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার গতির ঝড়ো হাওয়া আর ৮ মিটার উঁচু জলোচ্ছ্বাস—সব মিলিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলগুলো যেন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেনা, নৌবাহিনী ও উদ্ধারকর্মীরা লড়ছে সময়ের বিরুদ্ধে, তবে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ চিত্র পেতে কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোর অন্যতম শক্তিশালী ঝড় এটি। হাসপাতালগুলোতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় চলছে জেনারেটরে চিকিৎসা কার্যক্রম। হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল, রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত। শহরের রাস্তায় উল্টে পড়া গাছ, পানিতে ভেসে যাওয়া গাড়ি, ভেঙে পড়া ভবনের কাচ—সবই যেন প্রমাণ করছে প্রকৃতির শক্তির কাছে মানুষের অক্ষমতা।
চীনের প্রধানমন্ত্রী হে লিফেং ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম দ্রুত সমন্বয়ের নির্দেশ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে হাজারো মানুষ গৃহহীন হয়ে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলো কেবল ধ্বংস নয়, ভয়ের ছবিও আঁকছে—যেখানে প্রতিটি ঝড়ো হাওয়ার শব্দ মনে করিয়ে দেয় মানুষের ক্ষুদ্রতা।
রাগাসা ধীরে ধীরে দুর্বল হলেও তার রেখে যাওয়া ক্ষতচিহ্ন গভীর। দক্ষিণ চীন ও ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলে প্রবল বর্ষণ ও বন্যার নতুন হুমকি রয়ে গেছে। প্রকৃতির এই বিপর্যয় আবারও মনে করিয়ে দেয়—মানুষ প্রকৃতির সন্তান, নিয়ন্ত্রক নয়। আর যখন রাগাসার মতো সুপার টাইফুন পৃথিবীতে নামে, তখন সব সীমান্ত, সব প্রযুক্তি, সব শক্তি হারিয়ে যায় এক ভয়ংকর বাস্তবতায়।
সুপার টাইফুন রাগাসা যেন প্রকৃতির উন্মত্ত এক দানব, যে মুহূর্তেই দক্ষিণ চীন ও তাইওয়ানের শান্ত জনপদগুলোকে পরিণত করেছে মৃত্যুপুরীতে। তাইওয়ানে নিহত অন্তত ১৪ জন, আহত শতাধিক মানুষ—এই খবর কাঁপিয়ে দিচ্ছে বিশ্বকে। গুয়াংডং, ফুজিয়ান ও হাইনান প্রদেশে লাখ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরানো হয়েছে। ঝড়ের শক্তি ছিল ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার, যা রাগাসাকে ‘সুপার টাইফুন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ভেঙে পড়েছে ঘরবাড়ি, থমকে গেছে বিমান ও রেল চলাচল, বিদ্যুৎহীন অন্ধকারে রাত কাটাচ্ছে মানুষ। চীনের প্রধানমন্ত্রী হে লিফেং জরুরি উদ্ধার কার্যক্রমের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে ঝড় থেমে গেলেও আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে বন্যা ও ভূমিধসের। এই মানবিক বিপর্যয় ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে ভাঙা কাচ, ভেসে যাওয়া গাড়ি আর অসহায় মানুষের আর্তনাদ।
- বিশেষ প্রতিনিধি (Special National Correspondent) মোঃ সাইদুর রহমান (বাবু)
#সুপারটাইফুনরাগাসা #চীন #তাইওয়ান #প্রাকৃতিকদুর্যোগ #LiberationWar #ClimateCrisis #BreakingNews #দক্ষিণচীন #TyphoonRagasaa #CycloneUpdate #GlobalDisaster