10/14/2025 বিশ্ব বসতি দিবস ২০২৫: সবার জন্য পরিবেশবান্ধব ও দুর্যোগ সহনশীল আবাসন গড়ার আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার
odhikarpatra
৬ October ২০২৫ ২৩:৫৯
ছবির ক্যাপশন:
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বিশ্ব বসতি দিবস ২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন। (ছবি: পিআইডি)
ঢাকা, ৬ অক্টোবর ২০২৫ | অধিকার পত্র ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট
বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন ও মানবিক বসবাসের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সবার জন্য পরিবেশবান্ধব, দুর্যোগ সহনশীল ও আধুনিক আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, “বসতি কোনো বিলাসিতা নয়, এটি একটি মৌলিক মানবাধিকার। তাই প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও টেকসই আবাসন নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব হওয়া উচিত।”
আজ সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘বিশ্ব বসতি দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল— “পরিকল্পিত উন্নয়নের ধারা, নগর সমস্যায় সাড়া।”
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, শুধু শহর নয়, গ্রামাঞ্চলেও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে আধুনিক অবকাঠামো ও জীবনমানসম্পন্ন আবাসন নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, “একটি টেকসই বসতি মানে শুধু মাথা গোঁজার ঠাঁই নয়; সেখানে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, পরিবহন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার পূর্ণ সুযোগ থাকতে হবে।”
উপদেষ্টা সতর্ক করে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভূমি পানির নিচে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। “এখনই যদি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা না নেওয়া হয়, ভবিষ্যতে বিপুল সংখ্যক মানুষের পুনর্বাসন একটি ভয়াবহ সংকটে পরিণত হবে।”
তিনি প্রস্তাব করেন, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (PPP) ও কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (CSR) কর্মসূচির আওতায় নিম্নবিত্ত ও জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য সাশ্রয়ী আবাসন প্রকল্প হাতে নিতে হবে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, “বর্তমান মুক্তবাজার অর্থনীতির কারণে নগরায়নে একপাক্ষিক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। একজন বিত্তশালী একাধিক ফ্ল্যাট কিনতে পারছেন, কিন্তু একজন মধ্যবিত্ত নাগরিক একটি ফ্ল্যাট কেনার সক্ষমতাও হারাচ্ছেন। এটি সামাজিক বৈষম্য তৈরি করছে।”
তিনি মনে করেন, এই পরিস্থিতি দূর করতে রাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী আবাসনকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “উপকূলীয় শহরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত দিন দিন তীব্র হচ্ছে। পরিকল্পিত ও টেকসই নগর গঠন ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।”
তিনি ভূমির সঠিক ব্যবহার, গণপরিবহন উন্নয়ন, নিম্নআয়ের মানুষের জন্য মানসম্মত আবাসন এবং নগর সেবায় ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম, ইউএনডিপি-র ডেপুটি আবাসিক সমন্বয়কারী সোনালী দয়ারত্নে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোসা. ফেরদৌসী বেগমসহ সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে অতিথিরা বিশ্ব বসতি দিবসের স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন এবং পরে তিনদিনব্যাপী বসতি মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।
আলোচনা সভার আগে শেরেবাংলা নগর এলাকায় বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়।