10/30/2025 ট্রাম্প-শি বৈঠক: বিশ্ব অর্থনীতি ও বাণিজ্যে নতুন অধ্যায়ের সূচনা
Special Correspondent
৩০ October ২০২৫ ১০:৩৩
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আজ দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে আলাদা হলেন। বৈঠকটি নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হয়ে প্রায় এক ঘণ্টা। যা দুই দেশের মধ্যে চলমান জটিল সম্পর্ক এবং অর্থনৈতিক ও কৌশলগত ইস্যুগুলোর গুরুত্বকে তুলে ধরে। বৈঠক শেষে দুই নেতাই সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি তবে বৈঠকের ফলাফল নিয়ে বিশ্লেষকরা ইতিবাচক সংকেত দেখতে পাচ্ছেন। বৈঠকের পর শি জিনপিং তার মোটরকেডে করে গ্যাংঝু শহরের দিকে রওনা হয়েছেন। যেখানে আগামীকাল এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (APEC) শীর্ষ সম্মেলন শুরু হবে। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিমানবন্দর থেকে এয়ার ফোর্স ওয়ান এ চড়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লাইটে উঠেছেন। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মূল বিষয়গুলো ছিল বাণিজ্য, প্রযুক্তি, কৃষি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক। ট্রাম্প চীনের সঙ্গে ট্যারিফ কমানো এবং ফেন্টানিল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা চাইছেন, যা মার্কিন কৃষক এবং শিল্পপতিদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞদের মতে এই বৈঠক মার্কিন কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার পথ খুলে দিতে পারে বিশেষ করে সয়াবিন এবং অন্যান্য কৃষিজাত পণ্যের বাণিজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠায়।
প্রযুক্তি খাতেও বৈঠকের গুরুত্ব অপরিসীম। রিয়ার আর্থস এবং এআই চিপ সংক্রান্ত আলোচনা বৈঠকে কেন্দ্রবিন্দু ছিল। চীন বর্তমানে বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ খনিজের প্রায় ৯০% প্রক্রিয়াজাত করে, যা প্রযুক্তি ও সামরিক খাতের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নিয়ন্ত্রণকে দীর্ঘমেয়াদে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করছে, কিন্তু বৈঠকে দুই দেশের কর্মকর্তারা সম্ভাব্য সমাধান এবং সহযোগিতার দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। এছাড়াও চীনা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ টিকটক মার্কিন ক্রেতার কাছে বিক্রির সম্ভাব্য প্রক্রিয়াও বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে ছিল। বৈঠকের আগে শি জিনপিং বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনকে ইতিহাস ও বাস্তবতা অনুযায়ী অংশীদার ও বন্ধু হতে হবে। আমরা কঠিন সমস্যার সমাধানে একসাথে কাজ করতে পারি। ট্রাম্প বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি অত্যন্ত সফল বৈঠক হতে পারে। আমরা সবসময়ই একটি ভালো সম্পর্ক রেখেছি। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়। বৈঠকস্থলের আশেপাশে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল এবং সম্ভাব্য বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছে। বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে দুই দেশের কর্মকর্তারা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বৈঠক দুই দেশকে অতীতের অশান্তি থেকে দূরে সরিয়ে আরও পূর্বানুমানযোগ্য ও স্থিতিশীল সম্পর্কের দিকে নিয়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও কৃষিখাতের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য বড় চুক্তির আশ্বাসও মিলেছে। এই বৈঠকটি শুধু দুই দেশের জন্য নয় সমগ্র আন্তর্জাতিক অর্থনীতি এবং এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
-মো: সাইদুর রহমান (বাবু), বিশেষ প্রতিনিধি. অধিকারপত্র