11/03/2025 সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে উত্তাল জবি: ‘জাতিগত নিধন নিয়ে বৈশ্বিক নীরবতা কেন
odhikarpatra
২ November ২০২৫ ২১:৩৪
অধিকারপত্র ডটকম :
জবি প্রতিনিধি:
সুদানের পশ্চিম দারফুর অঞ্চলের আল-ফাশের শহরে চলমান গণহত্যা (Genocide) ও জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) হিউম্যান রাইটস সোসাইটি। সংগঠনের কর্মীরা অবিলম্বে এই অমানবিক হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে এবং বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
রবিবার (২ নভেম্বর) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে এই সংহতি ও প্রতিবাদ কর্মসূচি আয়োজিত হয়।
"মানবাধিকার কোনো ধর্ম বা বর্ণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়"
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সংগঠনটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, "নানা কারণে বিভিন্ন দেশের সংঘাত থেকে শুরু করে গৃহযুদ্ধে নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষ বলি হচ্ছে। সুদানে যে জাতিগত নিধন চলছে, তা নিয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে তেমন কোনো আলোচনা নেই। মানবতা কোনো
ধর্ম, বর্ণ বা রাজনৈতিক মতাদর্শের ভেতর সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। সকল মজলুমের পক্ষে অবস্থান নেওয়া একজন মানুষের নৈতিক ও মানবিক দায়িত্ব।"
তিনি আরও দৃঢ়তার সাথে ঘোষণা করেন যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিউম্যান রাইটস সোসাইটি সকল প্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার অবস্থান অব্যাহত রাখবে।
আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ
সংগঠনের সদস্য ফয়সাল মাহমুদ সুদানের ঘটনাকে আন্তর্জাতিক আইনের আলোকে বিশ্লেষণ করেন। তিনি বলেন, "সুদানে যে গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে, তা ১৯৪৮ সালের ‘জেনোসাইড কনভেনশন’-এর আলোকে স্পষ্টতই গণহত্যা এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এটি একটি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ভূমিকা এখন প্রশ্নবিদ্ধ।"
সংগঠনের সদস্য নিং ম এই গণহত্যার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানিয়ে গৃহসংঘাত বন্ধ ও মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করার দাবি জানান।
"সুশীল সমাজও নীরব, কারণ কি গায়ের রং?"
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ মাসুদ আন্তর্জাতিক মহলের নীরবতার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, "মানবাধিকারের কোনো বর্ণ নেই। সব বর্ণের মানুষের জন্য মানবাধিকার সমান। আমরা গাজায় গণহত্যা দেখেছি—গণমাধ্যমে গাজার চিত্র দেখি, কিন্তু সুদানে আড়াই বছর ধরে চলা গণহত্যার চিত্র দেখি না। সুশীল সমাজেও এ নিয়ে কোনো কথা হয় না—হয়তো এজন্য যে, সুদানের জনগোষ্ঠীর গায়ের রঙ কালো।"
তিনি সকলকে মনে করিয়ে দেন, সুদানের মানুষও মানুষ, তাদেরও বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, "জাতিসংঘ ইতিমধ্যে সুদানের গণহত্যাকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট হিসেবে ঘোষণা করেছে।" এই সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক মহলকে দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে দ্রুত শান্তি প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানান তিনি।
সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান কায়েস দারফুরে মানবিক সংকটের দ্রুত সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান এবং নির্বিচারে হত্যা অবিলম্বে বন্ধ করার কথা বলেন।
মানববন্ধনে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অধিকার রক্ষা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও মানবিক সংকট নিয়ে নিয়মিত সচেতনতামূলক ও প্রতিবাদ কর্মসূচি আয়োজন করে থাকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিউম্যান রাইটস সোসাইটি।