11/04/2025 ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাবেক আইন কর্মকর্তা গ্রেপ্তার: ফাঁস হওয়া ভিডিওতে ফিলিস্তিনি নির্যাতনের অভিযোগ
                Special Correspondent
৩ November ২০২৫ ২৩:৪৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | নভেম্বর ৩, ২০২৫
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাবেক শীর্ষ আইন কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ইফাত টোমার–ইরুশালমিকে (Maj. Gen. Yifat Tomer-Yerushalmi) একটি ফাঁস হওয়া ভিডিওর ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যেখানে ফিলিস্তিনি এক আটক ব্যক্তির ওপর গুরুতর নির্যাতনের দৃশ্য দেখা গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক ও সংকট তৈরি হয়েছে। গত সপ্তাহে টোমার ইরুশালমি ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর (IDF) সামরিক অ্যাডভোকেট জেনারেল পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি বলেন সেনাবাহিনীর আইনি ইউনিট থেকে গণমাধ্যমে যেকোনো তথ্য ফাঁসের সম্পূর্ণ দায় তিনি নিচ্ছেন। তবে রবিবার পরিস্থিতি নাটকীয় মোড় নেয় তাকে নিখোঁজ ঘোষণা করা হয় এবং ঘণ্টাব্যাপী অনুসন্ধানের পর তেল আবিবের উত্তরে একটি সৈকত থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়।
ফাঁস হওয়া ভিডিওটি ২০২৪ সালের আগস্টে একটি ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত হয়। ভিডিওতে দক্ষিণ ইসরায়েলের সেদ তেইমান (Sde Teiman) সামরিক ঘাঁটিতে কয়েকজন রিজার্ভ সৈন্যকে এক ফিলিস্তিনি আটক ব্যক্তিকে ঘিরে মারধর ও যৌন নির্যাতন করতে দেখা যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। ভিডিও ফুটেজ প্রকাশের পর পাঁচজন রিজার্ভ সৈন্যের বিরুদ্ধে অত্যাচার ও গুরুতর শারীরিক ক্ষতি সাধন এর অভিযোগ আনা হয়। তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং আদালতে তাদের মুখ ঢেকে হাজির হন। ডানপন্থি রাজনীতিকেরা ভিডিও ফাঁসকে সেনাবাহিনীর বদনাম ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন। অপরদিকে বামপন্থি মহল এটিকে ফিলিস্তিনি আটক ব্যক্তিদের ওপর ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বাস্তব প্রমাণ হিসেবে দেখছে। রক্ষণশীল দলের কয়েকজন সংসদ সদস্য এমনকি জুলাই ২০২৪-এ ওই ঘাঁটিতে গিয়ে অভিযুক্ত সৈন্যদের প্রতি সংহতি জানান। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ টোমার ইরুশালমির পদত্যাগের পর বলেন যে কেউ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা রক্ত কলঙ্ক ছড়ায়, সে ইউনিফর্ম পরার যোগ্য নয়। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও একই ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “সেদ তেইমান ঘটনা ইসরায়েল রাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ প্রচারযুদ্ধের আঘাত। জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজা থেকে আটক হাজারো পুরুষ, নারী ও শিশুকে ইসরায়েলি বাহিনী পদ্ধতিগত নির্যাতন যৌন সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার করেছে। যা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। ইসরায়েল এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে তারা আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে এবং প্রতিটি অভিযোগের তদন্ত করা হয়েছে। স্পেদ তেইমান ভিডিও ফাঁস ও সাবেক সামরিক আইন কর্মকর্তার গ্রেপ্তার ইসরায়েলের সমাজে গভীর বিভাজন সৃষ্টি করেছে একপক্ষে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি রক্ষার দাবি, অন্যপক্ষে মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রশ্ন। এই বিতর্ক হয়তো ইসরায়েলের সামরিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের জন্য দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে।
-মো: সাইদুর রহমান (বাবু), বিশেষ প্রতিনিধি. অধিকারপত্র