অধিকার পত্র ডটকম ঢাকা, ৮নভেম্বর ২০২৫ – দেশের বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নির্যাতন ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে গঠিত সেলগুলো কার্যত অকার্যকর বলে শিক্ষার্থী ও বিশ্লেষকরা অভিযোগ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এসব সেল শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ, বাস্তবে ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারছে না।
মূল প্রতিবেদন
- বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি বা নারী নির্যাতনের অভিযোগ অবহেলিত বা বিলম্বিতভাবে নিষ্পত্তি হয়।
- অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরা ভয়, অনভিপ্রেত ফল বা নাম প্রকাশ হওয়ার আশঙ্কা থেকে অভিযোগ জমা দিতে সংকোচ করেন।
- অনেক শিক্ষার্থী জানেনই না, বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কোনো কমিটি বা সেল রয়েছে।
কিছু উদাহরণ
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: যৌন হয়রানির ৮–১০টি অভিযোগ জমা পড়েছে; কোনো অভিযোগ এখনও সম্পূর্ণ নিষ্পত্তি হয়নি।
- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি): দুটি অভিযোগ জমা পড়েছে; একটি নিষ্পত্তি, অন্যটি প্রক্রিয়াধীন।
- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়: ১০টি অভিযোগের মধ্যে ৮টি তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়েছে, কিন্তু সম্পূর্ণ নিষ্পত্তি হয়নি।
- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: ২৭টি অভিযোগের মধ্যে ২২টি নিষ্পত্তি, ৫টি চলমান।
- নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: দুটি অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা, এখনও নিষ্পত্তি হয়নি।
বিশ্লেষক ও আইনজীবীর মন্তব্য
- আইনজীবী শাহিনুজ্জামান: “নিষ্ক্রিয় থাকা সরাসরি হাইকোর্টের নির্দেশনা লঙ্ঘনের শামিল। এই অবহেলার দায় প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিতে হবে। বাস্তবচিত্রে অনেক প্রতিষ্ঠান এসব নিয়ম মানছে না, যা আদালত অবমাননা ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
- ন্যাশনাল কো-অরডিনেটর সৈয়দা আহসানা জামান এ্যানি: “শিক্ষার্থীরা জানে না কোথায় অভিযোগ জমা দিতে হবে। প্রশাসনকে সর্বোচ্চ স্তর থেকে এই সেলগুলো কার্যকর করা এবং প্রচার করা জরুরি।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবস্থান
- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়: নতুন কমিটি ১০টির মতো অভিযোগ পেয়েছে; রিপোর্ট প্রশাসনকে জমা দেওয়া হয়েছে।
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ৮–১০টি অভিযোগের মিটিং সম্পন্ন, শীঘ্রই কেইস প্রকাশ করা হবে।
- রুয়েট ও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: অভিযোগগুলো এখনও প্রক্রিয়াধীন বা সেল নিষ্ক্রিয়।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা
ইউজিসি জানিয়েছে, জাতিসংঘের সঙ্গে যৌথভাবে কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কাঠামোগত পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
সংক্ষিপ্ত তথ্য:
- বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি সেলের কার্যকারিতা সীমিত।
- অভিযোগ জমা হলেও বিচার বিলম্বিত।
- শিক্ষার্থীরা নিরাপদ চ্যানেল না পেয়ে নিরুৎসাহিত।
- আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে কাঠামোগত সমাধান আনা হচ্ছে।
সুত্র, ক্যামপাস