11/16/2025 রায় সামনে, আর দেশে উত্তেজনা তুঙ্গে! দলীয় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান শেখ হাসিনার—মৃত্যুদণ্ড দাবি প্রসিকিউশনের
odhikarpatra
১৬ November ২০২৫ ০২:৫৩
অধিকার পত্র ডটকম :
ঢাকা, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় ঘোষণার আগেই দলীয় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ভারত থেকে বিবিসিকে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচনের আগে তাঁর দলকে ভোটে অংশগ্রহণ করতে দিতে হবে।
মূল তথ্য / কী ঘটছে
২০২৪ সালের ছাত্রনেতৃত্বাধীন গণবিক্ষোভে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ভারত আশ্রিত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শতাধিক হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রসিকিউশন তাঁর মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছে। সোমবার ঢাকা ট্রাইব্যুনালে এই মামলার রায় ঘোষণা হওয়ার কথা।
মামলা ঘিরে ঢাকায় বিশেষ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার তদন্তকারীরা জানিয়েছেন—হাসিনার সরকারের দমন-পীড়নে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হয়েছিলেন। তবে হাসিনা অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ অস্বীকার করে একে “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা” এবং আদালতকে “ক্যাঙ্গারু কোর্ট” বলে উল্লেখ করেছেন।
সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য
বিবিসিকে লিখিত উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন—
“আমরা আশা করি সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং নির্বাচন থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে। কোটি কোটি সমর্থককে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা উচিত নয়।”
মামলা প্রসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন—
“আমার বিরুদ্ধে যে বিচার চলছে তা এক ধরনের প্রহসন। আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি, নিজস্ব আইনজীবীও নিয়োগ করতে পারিনি।”
গণবিক্ষোভ চলাকালে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ ‘সুস্পষ্টভাবে’ অস্বীকার করে তিনি আরও বলেন—
“পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়েছিল, কিন্তু আমি কখনো নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিইনি।”
প্রসিকিউশনের দাবি—গোপন ফোনকলের একটি অডিও, যা BBC Eye যাচাই করেছে, সেখানে হাসিনাকে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে “প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের” অনুমোদন দিতে শোনা গেছে। এই অডিও আদালতে বাজানো হয়েছে।
এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও অভিযুক্ত। কামাল পলাতক, আর আল-মামুন দোষ স্বীকার করলেও এখনো দণ্ড পাননি।
অন্যদিকে, হাসিনার আইনজীবীরা জাতিসংঘে জরুরি আপিল করে ট্রাইব্যুনালের বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন।
গোপন কারাগার, গুম ও হত্যার অভিযোগ
ক্ষমতাচ্যুতির পর রাজধানী ও অন্যান্য স্থানে বেশ কিছু গোপন কারাগার পাওয়া যায়, যেখানে বহু মানুষ বিচারবহির্ভূতভাবে বছরের পর বছর আটক ছিলেন। বিরোধীদের গুম, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগও উঠেছে।
তবে এসব বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে হাসিনা বলেন—
“এসব কারাগার সম্পর্কে আমার জ্ঞান ছিল না। যদি কোনো কর্মকর্তা অপব্যবহার করে থাকে, তবে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত।”
তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেক মামলাতেও অভিযুক্ত, তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করছেন।
এ ছাড়া দুর্নীতির আরেকটি মামলায় হাসিনা ও তাঁর ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তারা বিচারের মুখোমুখি—যেখানে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
BBC