11/21/2025 ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ভবনের মাঝ থেকে ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার: সিসিটিভিতে ছাদে ওঠার দৃশ্য, সহপাঠীদের সঙ্গে পূর্বের হাতাহাতি নিয়ে পরিবারের প্রশ্ন
odhikarpatra
২০ November ২০২৫ ২১:১৫
এক তরুণ শিক্ষার্থীর এমন অকাল মৃত্যু শুধু একটি পরিবারের স্বপ্নকেই নয়, কেঁপে ওঠা উচিত আমাদের পুরো শিক্ষাঙ্গনের বিবেককে। বিশ্ববিদ্যালয় শুধু জ্ঞানের ঠিকানা নয়, নিরাপত্তা ও মানবিকতারও আশ্রয়স্থল। যেখানে পড়াশোনার চাপে, সহপাঠীর আচরণে কিংবা মানসিক অস্থিরতায় একজন শিক্ষার্থীর জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ে—সেখানে দায়িত্বহীনতা কিংবা নীরবতা কোনোটিই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ঘটনার প্রতিটি দিক সঠিকভাবে অনুসন্ধান করা রাষ্ট্র ও সমাজ—উভয়েরই দায়।
ক্রাইম প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
রাজধানীর বাড্ডার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে ঘটে গেলো মর্মান্তিক একটি ঘটনা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ফরাশ উদ্দিন ভবন ও মূল ভবনের মাঝের ফাঁকা জায়গা থেকে গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মুশফিকুজ্জামান (২০)-এর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
বাড্ডা পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা জানান, ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়—বিকেলেই মুশফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ তলার ছাদে ওঠেন। ঘটনার সময় সেখানে অন্য কাউকে দেখা যায়নি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, তিনি ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে থাকতে পারেন। তবে আত্মহত্যা, দুর্ঘটনা বা অন্য কোনো কারণ—সবকিছুই তদন্তসাপেক্ষ।
অন্যদিকে, পরিবার উত্থাপন করেছে গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ। ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে এসে মুশফিকের বাবা বি. এম. মুখলেছুজ্জামান জানান, তিন–চার দিন আগে পড়াশোনা নিয়ে কিছু সহপাঠীর সঙ্গে ছেলের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছিল। তাঁর মা জানিয়েছিলেন—সহপাঠীরা নাকি তাকে ছাদে নিয়ে যেতে চাইত। পরিবার মনে করছে, ঘটনাটি শুধু “আত্মহত্যা” বলে ঘোষণা দেওয়ার আগে সব দিক গভীরভাবে তদন্ত করা জরুরি।
মুশফিকের চাচা মনিরুজ্জামান মনির জানান, মুশফিক খিলগাঁওয়ে পরিবারসহ থাকতেন এবং প্রতিদিনের মতো আজও বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়।
বাড্ডা থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, “সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী ছাদে তিনি একাই ছিলেন। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে মনে হলেও, তদন্ত ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
অতঃপর বলা আবশ্যক—এক তরুণ শিক্ষার্থীর জীবনাবসান কখনোই নিছক ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বা সামান্য ঘটনার ফল হতে পারে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাব্যবস্থা, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য, সহপাঠীদের আচরণ এবং প্রশাসনিক জবাবদিহির প্রতিটি স্তর গভীর নিরীক্ষার দাবি রাখে। তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদ্ঘাটিত হোক, এবং আর কোনো পরিবার যেন সন্তান হারানোর যন্ত্রণা বয়ে না বেড়ায়—এই প্রত্যাশাই সমাজের প্রতি দিনের আহ্বান।
#ইস্টওয়েস্টইউনিভার্সিটি #বাড্ডা #শিক্ষার্থী_মৃত্যু #ঢামেক #ঢাকা #CampusSafety #বাংলাদেশনিউজ #OdhikarPatra #BreakingNews #CrimeNews #UniversityNews