11/21/2025 মোহাম্মদ বিন সালমানের হোয়াইট হাউজ জয়: যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রায় সব চাওয়া পূর্ণ
Special Correspondent
২১ November ২০২৫ ০১:০১
নিউজ ডেস্ক │অধিকারপত্র
সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে পৌঁছালে ট্রাম্প প্রশাসন তার জন্য প্রায় সবকিছু নিয়ে হাজির ছিল। গত তিন বছরে যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি সম্পর্কের দিকটি অনেকটা উল্টে গেছে। যেখানে জো বাইডেন প্রশাসন তাকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার অঙ্গীকার করেছিল সেখানে ট্রাম্প প্রশাসন সরাসরি তাকে রক্ষা করলেন। সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যার প্রসঙ্গে এক রিপোর্টারকে ট্রাম্প আমাদের অতিথিকে লজ্জা দেওয়া হিসেবে দণ্ডিত করেছিলেন। প্রধান অর্জনগুলোর মধ্যে ছিল সৌদি আরবকে মেজর নন-নাটো অ্যালাই হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া। F-35 যুদ্ধবিমান বিক্রির অনুমোদন, নতুন কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি, এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপস, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও পারমাণবিক শক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা। এ ছাড়া দুদেশ সুদানের গৃহযুদ্ধ সমাধানে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে সৌদি আরব পুরোপুরি সন্তুষ্ট হয়নি। তারা চেয়েছিল নিজেদের পারমাণবিক শক্তি বাড়ানোর অধিকার (স্থানীয় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধি) এবং একটি আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি যা এখনও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিশ্চিত হয়নি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সৌদি আরব ধীরে ধীরে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও নিরাপত্তা অংশীদার খুঁজছে। এর উদাহরণ হিসেবে দেখা যায়, পাকিস্তানকে সাথে নিয়ে একটি যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি করা এবং চীনের মাধ্যমে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন।
আঞ্চলিক কূটনীতি এবং অর্থনীতিতে সৌদি আরবের কৌশলগত পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং ট্রাম্প প্রশাসনের বড় বিনিয়োগ আকর্ষণ প্রদানের প্রয়াস এই বৈঠককে ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। মোহাম্মদ বিন সালমান ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠক যুক্তরাষ্ট্র–সৌদি সম্পর্ককে নতুন এক কৌশলগত উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে দুই পক্ষের অগ্রগতি এক নতুন যুগের সূচনা নির্দেশ করে। যদিও সৌদি আরব পারমাণবিক সমৃদ্ধি অধিকার ও আনুষ্ঠানিক প্রতিরক্ষা চুক্তির মতো কিছু বড় দাবিতে পূর্ণ সাড়া পায়নি, তবুও বৈঠকটি সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের শক্তিশালী বাস্তবতাকে স্পষ্ট করেছে। একই সঙ্গে সৌদি আরবের বহুমাত্রিক কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার প্রচেষ্টাও তুলে ধরেছে যেখানে তারা যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি চীন ও পাকিস্তানকেও সম্ভাব্য নিরাপত্তা অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করছে। সব মিলিয়ে এই বৈঠক মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতি ও বৈশ্বিক ক্ষমতার সমীকরণে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে বলেই প্রতীয়মান।
-মো: সাইদুর রহমান (বাবু), বিশেষ প্রতিনিধি. অধিকারপত্র