12/04/2025 টেকনাফে চরম আতঙ্ক: পাঁচ কিশোর অপহরণের পর সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বের হতেও ভয় পাচ্ছে মানুষ
odhikarpatra
৪ December ২০২৫ ১৭:৩৮
ক্রাইম প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়-সংলগ্ন এলাকায় অস্ত্রের মুখে পাঁচ কিশোরকে অপহরণের পর জনমনে তৈরি হয়েছে তীব্র আতঙ্ক। গত ৩০ নভেম্বর স্থানীয় একটি চায়ের দোকান থেকে সশস্ত্র ডাকাতদল ওই কিশোরদের অপহরণ করে। এর পর থেকে সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বের হতেও ভয় পাচ্ছে এলাকাবাসী।
অপহৃত মামুনের বাবা অছিউর রহমান জানান, মাগরিবের আজানের পরপরই পাহাড়ি জঙ্গল থেকে ৮–১০ জন মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাত দোকান ঘিরে ফেলে। টাকা-পয়সা লুট করার পর দোকানে থাকা পাঁচ কিশোরকে জঙ্গলের ভেতর টেনে নিয়ে যায় তারা।
তিনি বলেন, “আমার ১৭ বছরের ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। দুই দিন ধরে স্ত্রী কিছু খায় না—শুধু কাঁদছে।”
অপহৃতদের একজন পালিয়ে ফিরে আসতে সক্ষম হলেও চারজনের দুই দিনেও কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। অপহৃত আবু বক্কর ছিদ্দিকের বাবা মোহাম্মদ হাসান বলেন, “মোবাইলের দিকে তাকিয়ে আছি। কত টাকা চাইবে কে জানে! দিনমজুর মানুষ, এত টাকা দেব কীভাবে?”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই ধরনের অপহরণ নতুন নয়। গত ছয় মাসে কমপক্ষে ৩০ জন শিশু-কিশোরকে অপহরণ করা হয়েছে, এবং মুক্তিপণ দিয়েই তাদের ছাড়ানো হয়েছে।
আরেক বাসিন্দা রিয়াজুল হাসান খোকন বলেন, “গত এক বছরে টেকনাফে ২০০ জনের মতো মানুষ অপহৃত হয়েছে। ডাকাতি তো প্রতিদিনের ঘটনা।”
তিনি আরও বলেন, “এখন এটা আতঙ্কের জনপদ। সন্ধ্যার পর মানুষ বাইরে বের হতে ভয় পায়।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ না থাকায় অপহরণ ও ডাকাতি বেড়েই চলেছে।
টেকনাফ থানার ওসি জায়েদ নূর জানান, পাহাড় ও সাগরের মাঝামাঝি অবস্থান হওয়ায় ডাকাতদের সুযোগ বেশি।
তিনি বলেন, “অনেক ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা ও রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। সেনা–পুলিশ–বিজিবির যৌথ অভিযান চলছে।”
ওসি আরও দাবি করেন, সব ঘটনাই প্রচলিত অর্থে অপহরণ নয়—অনেক ক্ষেত্রে মাদক কারবারের দেনা-পাওনা, ভাগাভাগি ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকেই এসব ঘটে।
সম্প্রতি অপহৃত কিশোরদের উদ্ধারে টাস্কফোর্স কাজ শুরু করেছে বলে জানান তিনি।