12/12/2025 তারেক রহমান শিগগিরই দেশে আসছেন; বিএনপিকে পুরোপুরি জয়লাভ করতে হবে: জাতীয় নির্বাচনে দল গড়ার পরিকল্পনা অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল
odhikarpatra
১১ December ২০২৫ ১৬:৫১
ঢাকা, অধিকারপত্র ডটকম: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগামী নির্বাচনে দলকে "পুরোপুরিভাবে জয়লাভ" করতে হবে বলে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খুব শিগগিরই দেশে আসবেন এবং তার আগমনে গোটা বাংলাদেশের চেহারা বদলে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে বার্তা
মির্জা ফখরুল বলেন, "তারেক রহমান যেদিন বাংলাদেশে পা দেবেন, সেদিন যেন সারা বাংলাদেশ কেঁপে ওঠে। সেদিন গোটা বাংলাদেশের চেহারা বদলে দিতে চায় বিএনপি।"
তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, অনেক বাধা-বিপত্তি ও অপপ্রচার আসবে, কিন্তু সবকিছু কাটিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, "বিএনপি কোনো দিনই পরাজিত হয়নি, পরাজিত হবে না।
বিএনপি এ দেশের জনগণের দল, মুক্তিযুদ্ধের দল।"
দলের মহাসচিবের মতে, বিএনপিকে কেবল ইস্পাতদৃঢ় ঐক্য ও জাতীয়তাবাদী দর্শনই সাফল্য এনে দেবে, অন্য কিছু নয়।
নির্বাচন ও নতুন নেতৃত্ব
আজ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির সুযোগ এসেছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিনিধিত্বশীল সংসদ গঠনের সুযোগ এসেছে, যা দেশকে নতুন দিগন্তের দিকে নিয়ে যাবে। তিনি নিশ্চিত করেন যে এর নেতৃত্বে থাকবেন তারেক রহমান।
তিনি বিএনপি নেতা-কর্মীদের প্রতি দেশের পেছনে টেনে নিয়ে যাওয়ার শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার এবং সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তিকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান।
নেতৃত্ব ও নির্বাচন কৌশল
মির্জা ফখরুল জোর দিয়ে বলেন, "আগামী নির্বাচন আওয়ামী লীগ আমলের নির্বাচন নয়। এই নির্বাচন সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে।"
নির্বাচনে বিজয়ী হতে হলে জনগণের ভালোবাসা আদায় করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, "মানুষের মন জয় করে তাদের ভোটকেন্দ্রে আনতে হবে, বিএনপির পক্ষে ভোট দেওয়াতে হবে।"
মনোনয়ন পাওয়া না পাওয়া নিয়ে এখন চিন্তার প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের কাছে বিএনপি কী দেবে, সেই পরিকল্পনা সামনে নিয়ে আসতে হবে।
সংস্কার ও পরিকল্পনা
তরুণদের নেতৃত্বে গঠিত একটি নতুন দলের সমালোচনা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিই সংস্কারের জন্ম দিয়েছে। তিনি জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, মুক্ত গণমাধ্যম সৃষ্টি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং খালেদা জিয়ার সময়ে নারীদের শিক্ষা, যুবকদের কর্মসংস্থান, অর্থনীতির আধুনিকায়নসহ বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরেন।
তিনি উল্লেখ করেন, গত সাড়ে ১৫ বছরের লড়াই এখন শেষ দিকে এবং এই লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই বিএনপিকে সরকার গঠন করাতে হবে। তিনি বিশ্বাস করেন, তারেক রহমানের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, ফ্যামিলি কার্ড, কৃষক কার্ড, কর্মসংস্থান সহ আটটি বিষয়ে পরিকল্পনা জনগণের কাছে পৌঁছে দিলে তারা নিশ্চিতভাবে ধানের শীষে ভোট দেবেন।
অপশক্তির বিরুদ্ধে সতর্কতা
মির্জা ফখরুল নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে বলেন, পেছন থেকে কোনো কালো থাবা বেরিয়ে আসছে কি না, আরেকটা ফ্যাসিবাদ দেশের ওপর চেপে বসতে চাচ্ছে কি না, বা ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছে কি না—এগুলো খেয়াল রাখতে হবে এবং সেই শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং সঞ্চালনা করেন যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। অনুষ্ঠানটি শুক্রবার ছাড়া আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।