12/17/2025 ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ, তবু রাজনৈতিক সংগঠনের অগ্রাধিকার—প্রশ্নে প্রশাসনের ভূমিকা
odhikarpatra
১৬ December ২০২৫ ১৮:০৮
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিভাগগুলোর পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষ হওয়ার পর উপস্থাপক ঘোষণা দেন যে নিবন্ধিত ছাত্রসংগঠনগুলো শ্রদ্ধা জানাবে। কিন্তু নিবন্ধিত সংগঠন না হয়েও প্রথমেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নাম ঘোষণা করা হয়। এতে উপস্থিত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা প্রতিবাদ জানান এবং উপস্থাপনার দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের কাছে ব্যাখ্যা চান।
এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ‘রাজাকার’, ‘আওয়ামী দোসর’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
প্রশাসনের উপস্থিতি ও অভিযোগপরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের শহীদ মিনারের বেদিতে আসার দাবি জানান। পরে উপাচার্য ও অন্যান্য প্রশাসনিক ব্যক্তিরা সেখানে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শোনেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাদের মারতে তেড়ে আসায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এ সময় বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. মো. শাহাদাত হোসেন ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন।
এর মধ্যেই ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আবার শহীদ মিনারের বেদিতে আসেন। তারা ‘শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে’ অভিযোগ তুলে পুনরায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান।
কুবি সায়েন্স ক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরাফ ভুঁইয়া বলেন,
“আমরা শুধু জানতে চেয়েছি কেন সিকুয়েন্স ভাঙা হলো এবং রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণা কেন করা হলো। ছাত্রদল আমাদের ওপর চড়াও হয় এবং ‘রাজাকার’ স্লোগান দেয়।”
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) কুবি প্লাটুনের ক্যাডেট সার্জেন্ট শাহিন ইয়াসার বলেন,
“সিকুয়েন্স অনুযায়ী হলে এমন পরিস্থিতি হতো না। এই দায় আয়োজক কমিটির।”
কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি সাদিয়া আফরিন জানান,
“রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে একটি রাজনৈতিক সংগঠনের পুষ্পস্তবক অর্পণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এর প্রতিবাদে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বয়কট করছি।”
শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ বলেন,
“বিজয় দিবসে ফুল দেওয়ার অধিকার সবার আছে। আমাদের বাধা দেওয়া হয়েছে বলেই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।”
বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সোহরাব উদ্দিন বলেন,
“ঘটনাটি প্রত্যাশিত ছিল না। নাম ঘোষণার পরপরই তা প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং আমরা দুঃখপ্রকাশ করেছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন,
“শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার অধিকার সবারই আছে। তবে সিদ্ধান্ত ছিল নিবন্ধিত সংগঠনগুলোর পর অনিবন্ধিত সংগঠনগুলো শ্রদ্ধা জানাবে। বিষয়টি নিয়ে কমিটির সঙ্গে বসে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
## শাহরিয়ার হাসান জুবায়ের #