12/22/2025 সুপরিকল্পিত শুটার টিম, শতাধিক সিসিটিভি বিশ্লেষণ—হাদি হত্যাকাণ্ডে ভয়ংকর চাঞ্চল্যকর তথ্য
odhikarpatra
২২ December ২০২৫ ১৭:৫১
বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ড ছিল একটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত হত্যামিশন—এমনই তথ্য উঠে এসেছে গোয়েন্দা তদন্তে। বিদেশফেরত মূল শুটার ফয়সালকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হয় একটি শুটার টিম, যেখানে ধাপে ধাপে বিশ্বাস অর্জন, অনুসরণ, রেকি ও পালানোর নিখুঁত ছক বাস্তবায়ন করা হয় মাত্র সাত দিনের মধ্যে।
গোয়েন্দাদের তথ্যমতে, হত্যাকাণ্ডের মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় মূল অভিযুক্ত শুটার ফয়সাল। একইসঙ্গে পরিকল্পনা অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ আলামত গায়েব করার চেষ্টা করা হয়।
তদন্তে জানা যায়, ইনকিলাব মঞ্চের কালচারাল সেন্টারেই প্রথম পরিচয় হয় শরিফ ওসমান হাদি ও শুটার ফয়সালের।
গত ৪ ডিসেম্বর রাত ৮টা ১৮ মিনিটে ফয়সাল ও তার সহযোগী কবির সেখানে যান। মাত্র ছয় মিনিটের বৈঠকে হাদির সঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দেন ফয়সাল—যা ছিল হত্যামিশনের প্রথম ধাপ।
এরপর ৯ ডিসেম্বর ফের কালচারাল সেন্টারে আসেন ফয়সাল, সঙ্গে ছিলেন আলমগীর। নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে আলোচনা হয় এবং এই বৈঠকের মাধ্যমেই হাদির টিমে প্রবেশ নিশ্চিত করেন তিনি।
১০ ডিসেম্বর সেগুনবাগিচায় সরাসরি প্রচারণায় অংশ নেন ফয়সাল।
প্রচারণায় যুক্ত হওয়ার পরপরই হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা শুরু হয়। নরসিংদী, সাভার ও মানিকগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় রেকি করেন ফয়সাল।
১১ ডিসেম্বর পশ্চিম আগারগাঁওয়ে বোনের বাসায় অবস্থান নেন তিনি।
হামলার দিন ভোরে হেমায়েতপুরের একটি রিসোর্টে যান ফয়সাল। রিসোর্টের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ভোর ৫টা ২২ মিনিটে ফয়সাল ও আলমগীর গ্রিন জোন রিসোর্টে প্রবেশ করেন। সেখানে আগে থেকেই ছিলেন ফয়সালের বান্ধবী মারিয়া ও তার বোন।
গোয়েন্দা তথ্যে উঠে এসেছে, সেখানে হাদির একটি ভিডিও দেখিয়ে ফয়সাল বলেন—“হাদির মাথায় গুলি করলে দেশজুড়ে আলোড়ন তৈরি হবে”। ঘটনার পর সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখার নির্দেশও দেন তিনি।
সকাল ১১টা ৫ মিনিটে মোটরসাইকেলে করে আগারগাঁও থেকে সেগুনবাগিচার প্রচারণায় পৌঁছান ফয়সাল।
দুপুর ১২টা ২২ মিনিটে হাদি মতিঝিলের উদ্দেশ্যে রওনা হলে অটোরিকশা অনুসরণ করতে থাকেন শুটাররা।
নামাজ শেষে দুপুর ২টা ১৬ মিনিটে আবার যাত্রা শুরু হলে দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে পল্টনের বক্স কালভার্ট এলাকায় প্রবেশ করে তারা।
দুপুর ২টা ২৪ মিনিটে খুব কাছ থেকে হাদিকে লক্ষ্য করে দুটি গুলি ছোড়ে ফয়সাল।
আহত অবস্থায় হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর সেখানে তার মৃত্যু হয়।
পরবর্তীতে মরদেহ দেশে এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির নিকটে তাকে দাফন করা হয়।
বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
#শরিফ_ওসমান_হাদি #হাদি_হত্যাকাণ্ড #পরিকল্পিত_হত্যা #শুটার_ফয়সাল #ইনকিলাব_মঞ্চ #রাজনৈতিক_হত্যা #বাংলাদেশ_রাজনীতি #CrimeNewsBD #DhakaCrime