12/24/2025 প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ জাতিসংঘের, অপরাধীদের দ্রুত বিচারের দাবি
odhikarpatra
২৩ December ২০২৫ ২১:৫১
বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
বাংলাদেশে শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার–এর কার্যালয় এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট ভবনে সংঘটিত সহিংস হামলার ঘটনায় গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মতামত ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান। তিনি এসব ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত ও কার্যকরভাবে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র লক্ষ্য করে সংঘটিত তথাকথিত ‘মব হামলা’ অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সরকারকে অবশ্যই এসব হামলার পেছনের দায়ীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের তরুণ নেতা শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকাণ্ডের পর দেশজুড়ে বিক্ষোভের সুযোগ নিয়ে পরিকল্পিতভাবে সংবাদমাধ্যম ও সংস্কৃতি অঙ্গনে হামলা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর, ছায়ানট ভবনে হামলা এবং নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলার ঘটনাও উল্লেখ করা হয়।
আইরিন খান স্পষ্টভাবে বলেন,
“এই মব আক্রমণগুলো হঠাৎ করে ঘটেনি। বিচারহীনতা দূর করতে এবং সংবাদমাধ্যম ও শিল্প-সাহিত্যের স্বাধীনতা রক্ষা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার ফলেই এ ধরনের সহিংসতা দেখা দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, একজন অনুপ্রেরণাদায়ী নেতার পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি সাংবাদিক ও শিল্পীদের ওপর সংঘটিত সহিংসতা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য ভয়াবহ সংকেত।
নির্বাচনের প্রস্তুতির সময়ে জনরোষকে সাংবাদিক, শিল্পী ও ভিন্নমতের মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করাকে “অত্যন্ত বিপজ্জনক প্রবণতা” হিসেবে উল্লেখ করে আইরিন খান বলেন, এর ফলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সংখ্যালঘুদের কণ্ঠস্বর এবং গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
জাতিসংঘের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে কয়েক শ সাংবাদিককে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনেককে দীর্ঘ সময় বিনা বিচারে আটক রাখা হয়েছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকজন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন।
আইরিন খান অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার বিচারহীনতার পুরোনো ধারাই অনুসরণ করছে এবং সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের ওপর হামলা ও হুমকির ঘটনাগুলোকে কার্যত স্বাভাবিক হিসেবে দেখছে।
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান—
নিরাপদ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার রক্ষা করা অপরিহার্য বলেও মন্তব্য করেন জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ।
এ বিষয়ে জাতিসংঘের মতামত ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
#প্রথমআলো #ডেইলিস্টার #মবসহিংসতা #আইরিনখান #জাতিসংঘ #মতপ্রকাশের_স্বাধীনতা #বাংলাদেশ #সংবাদমাধ্যম #গণতন্ত্র #odhikarpatra