12/24/2025 মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন আধিপত্যের প্রত্যাবর্তন: ২০২৫ সালে ট্রাম্পের ‘পিস থ্রু স্ট্রেংথ’ কৌশলে বদলে গেল সমীকরণ
odhikarpatra
২৪ December ২০২৫ ১৮:৫৩
অধিকার পত্র
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | অধিকার পত্র দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা ছিল যে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য থেকে তার প্রভাব গুটিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু ২০২৫ সাল সেই ধারণাকে পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, পিছু হটা নয় বরং সামরিক শক্তির কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমেই গাজা থেকে ইরান পর্যন্ত পুরো অঞ্চলের ভূ-রাজনীতি নতুন করে সাজিয়েছে ওয়াশিংটন।
ফক্স নিউজের এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং সকল জীবিত ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তি এই বছরের সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জিম্মি মুক্তি ও গাজা যুদ্ধবিরতি
২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে মিশরের শারম আল-শেখে একটি ঐতিহাসিক শীর্ষ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটে। এই চুক্তির আওতায় হামাসের কবজায় থাকা সমস্ত জীবিত ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পায়।
ইসরায়েলি রাজনৈতিক বিশ্লেষক নাদাভ ইয়াল বলেন, "প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এই চুক্তি সম্ভব ছিল না। তিনি এমন এক ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করেছেন যা আগে অসম্ভব বলে মনে করা হতো।" তবে এই শান্তি এখনো ভঙ্গুর এবং গাজায় পরবর্তী প্রশাসনিক কাঠামো তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুক্ত রয়েছে।
ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে আঘাত ও আঞ্চলিক প্রভাব
২০২৫ সাল ইরানের জন্য ছিল চরম বিপর্যয়ের বছর। 'অপারেশন রাইজিং লায়ন' এবং 'মিডনাইট হ্যামার'-এর মাধ্যমে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে ইরানের সামরিক অবকাঠামো এবং পরমাণু কেন্দ্রে শক্তিশালী হামলা চালায়।
প্রতিবেদনের মূল পয়েন্টসমূহ:
* সিরিয়ায় পরিবর্তন: ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আসাদ সরকারের পতনের পর ২০২৫ সালে সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা ফেরাতে অগ্রণী ভূমিকা নেয় যুক্তরাষ্ট্র।
* ইরানের বিপর্যয়: মার্কিন ও ইসরায়েলি হামলায় ইরানের প্রক্সি নেটওয়ার্ক এবং পরমাণু কর্মসূচি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
* আব্রাহাম অ্যাকর্ডস: সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
শক্তির মাধ্যমেই শান্তি (Peace through Strength)
জিনিসা (JINSA)-এর নীতি বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্লেইস মিসজটাল বলেন, "২০২৫ সাল একটি দীর্ঘস্থায়ী কৌশলগত শিক্ষা নিশ্চিত করেছে: এই অঞ্চলে 'শক্তি'ই হলো প্রধান মুদ্রা। মার্কিন নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নেই।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বর্তমানের এই আপেক্ষিক শান্তি কোনো সাধারণ কূটনীতির ফল নয়, বরং এটি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক শক্তি প্রদর্শনের ফলাফল।
২০২৬ সালের চ্যালেঞ্জ
বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে, এই স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে হলে ২০২৬ সালেও ওয়াশিংটনকে সমানভাবে সক্রিয় থাকতে হবে। ইরান আবারও তার প্রভাব পুনর্গঠনের চেষ্টা করতে পারে এবং আইএস (ISIS)-এর মতো গোষ্ঠীগুলো নতুন করে মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘পিস থ্রু স্ট্রেংথ’ বা শক্তির মাধ্যমে শান্তি অর্জনের নীতি ২০২৫ সালে সফল হলেও, আগামী বছরে মধ্যপ্রাচ্যের বালিতে নতুন কোনো ঝর ওঠে কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
সূত্র: ফক্স নিউজ অনুবাদ ও সম্পাদনা: অধিকার পত্র ডেস্ক