12/24/2025 ইসরায়েল-মিশর ঐতিহাসিক গ্যাস চুক্তি: ৩৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে মধ্যস্থতা যুক্তরাষ্ট্রের
odhikarpatra
২৪ December ২০২৫ ১৯:১৯
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | অধিকার পত্র : আঞ্চলিক জ্বালানি রাজনীতিতে এক বিশাল পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে মিশরের সঙ্গে ৩৫ বিলিয়ন ডলারের (১১২ বিলিয়ন শেকেল) একটি বিশাল গ্যাস চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি এটিকে ইসরায়েলের ইতিহাসের "বৃহত্তম গ্যাস চুক্তি" হিসেবে অভিহিত করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের তীব্র কূটনৈতিক চাপের মুখে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো, যা মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চুক্তির মূল দিকসমূহ:
* আর্থিক মূল্য: প্রায় ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
* মূল অংশীদার: মার্কিন জ্বালানি জায়ান্ট কোম্পানি 'শেভরন' (Chevron) এই চুক্তির অন্যতম প্রধান পক্ষ।
* সরবরাহ: ইসরায়েল থেকে মিশরে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করা হবে।
* উদ্দেশ্য: ইসরায়েলকে আঞ্চলিক জ্বালানি শক্তিতে রূপান্তর করা এবং মিশরের জ্বালানি হাব হওয়ার লক্ষ্যকে সহায়তা করা।
নেপথ্যে মার্কিন প্রভাব
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ইসরায়েল এই চুক্তির অনুমোদন দিতে কয়েক মাস দেরি করলেও শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসনের চাপে এটি চূড়ান্ত করতে বাধ্য হয়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির মধ্যে একটি শীর্ষ বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা করছেন। এই গ্যাস চুক্তিকে সেই সম্ভাব্য বৈঠকের একটি "ভিত্তি" হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
মিশরের অবস্থান
গ্যাস চুক্তিতে রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য নেই বলে দাবি করেছে কায়রো। মিশরের স্টেট ইনফরমেশন সার্ভিসের চেয়ারম্যান দিয়া রাশওয়ান এক বিবৃতিতে বলেন, "এটি সম্পূর্ণ একটি বাণিজ্যিক লেনদেন। পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে মিশরের জ্বালানি বাণিজ্যের কেন্দ্র হয়ে ওঠার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ।" একই সঙ্গে তিনি ফিলিস্তিনিদের অধিকারের প্রতি মিশরের অবিচল সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
১৯৭৯ সালে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করলেও গত এক দশকে ইসরায়েল ও মিশরের রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়নি। গাজা যুদ্ধ এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক ইস্যুতে নেতানিয়াহু ও সিসির সম্পর্ক দীর্ঘকাল ধরে শীতল ছিল। চলতি মাসের শেষের দিকে মার-এ-লাগোতে ট্রাম্পের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সাক্ষাতের কথা রয়েছে, যেখানে মিশর-ইসরায়েল সম্পর্কের বরফ গলানোর বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব
এই চুক্তি কেবল জ্বালানি সরবরাহ নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যে 'আব্রাহাম অ্যাকর্ডস' বা শান্তি প্রক্রিয়া সম্প্রসারণের মার্কিন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদি সিসি ও নেতানিয়াহুর বৈঠক সফল হয়, তবে তা এই অঞ্চলের রাজনীতিতে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করবে।
সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম অনুবাদ ও সম্পাদনা: অধিকার পত্র ডেস্ক