12/26/2025 বরেন্দ্র অঞ্চলে আলু চাষে বিপ্লব: বাড়তি খরচে দুশ্চিন্তায় গোদাগাড়ীর কৃষক
odhikarpatra
২৬ December ২০২৫ ১৩:৫৪
রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি
রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের অন্যতম শস্যভাণ্ডার গোদাগাড়ী উপজেলায় এবার আলু চাষে ব্যাপক সাফল্যের ইঙ্গিত মিলছে। চারদিকে চোখ রাখলেই দেখা যায় সবুজের সমারোহ—বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে দোল খাচ্ছে আলুর কচি পাতা। অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির সঠিক প্রয়োগে চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
গত মৌসুমে আলুর ভালো বাজারদর এবং বর্তমান চাহিদা বৃদ্ধির কারণে এবার চাষে আগ্রহ বেড়েছে বহুগুণ। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪–২৫ মৌসুমে রাজশাহী জেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজার ৮০০ হেক্টর। তবে বাস্তবে এই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জমিতে। বিশেষ করে গোদাগাড়ীর মোহনপুর, পাকড়ী, রিশিকুল, দেওপাড়া ইউনিয়ন এবং গোদাগাড়ী ও কাঁকনহাট পৌর এলাকায় আলু চাষের জোয়ার দেখা গেছে।
গোদাগাড়ীতে উৎপাদিত আলুর চাহিদা দেশের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে বেশ শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। কৃষকরা মূলত ডায়মন্ড, কার্ডিনাল ও এস্টারিক্স (লাল আলু) জাতের আলু বেশি চাষ করছেন। পাশাপাশি অধিক ফলনের আশায় বার্মা, গ্রানোলা ও কুপরিসুন্দরী জাতের আলুর চাষও বাড়ছে। বাজারদর স্থিতিশীল থাকলে এই অঞ্চলের আলু জাতীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মাঠে সবুজের হাসি থাকলেও কৃষকের মনে বাড়তি খরচের চাপ স্পষ্ট। কৃষকদের হিসাব অনুযায়ী—
২০২১ সালের নভেম্বর মাসের আকস্মিক বন্যা ও ভারী বৃষ্টিপাতের স্মৃতি এখনও কৃষকদের মনে আতঙ্ক তৈরি করে। এবারও যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিবৃষ্টি বা রোগবালাই দেখা দেয়, তাহলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে পারেন প্রান্তিক চাষীরা—এমন শঙ্কাই ঘুরপাক খাচ্ছে মাঠে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছে। সঠিক সময়ে সেচ, নিড়ানি ও রোগবালাই প্রতিরোধে কর্মকর্তারা নিবিড় যোগাযোগ রাখছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গোদাগাড়ীর অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পেলে, এই আলু চাষ শুধু কৃষকের ভাগ্যই নয়—পুরো উপজেলার অর্থনৈতিক চিত্র বদলে দিতে পারে।
রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি
মোঃ রবিউল ইসলাম মিনাল
📅 ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫