12/31/2025 মিথ্যা আশ্বাস নয়, বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনাই জাতির সামনে আনবে জামায়াত: ডা. শফিকুর রহমান
odhikarpatra
৩০ December ২০২৫ ২৩:৪০
বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
📅 ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিবেদন
ঢাকা: সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে কোনো ধরনের অবাস্তব বা মিথ্যা আশ্বাস জাতির সামনে দেওয়া হবে না—এমন স্পষ্ট অবস্থানের কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, যেসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব, কেবল সেগুলোই জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে এবং জনগণের সহযোগিতা পেলে সেগুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে ‘হ্যালো আওয়ার লিডার’ শীর্ষক সরাসরি মতবিনিময় ও প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এতে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, তরুণ ও যুবসমাজ অংশগ্রহণ করেন।
ডা. শফিকুর রহমান জানান, নাগরিকদের প্রত্যাশা ও ভাবনা জানার লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যে ‘জনতার ইশতেহার’ প্রকাশ করেছে। সেখান থেকে পাওয়া প্রস্তাবনা, চিন্তা ও স্বপ্নসমূহ যাচাই-বাছাই করে দলের চূড়ান্ত ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বিশেষ করে তরুণ সমাজের ভাবনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ধাপে ধাপে বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে কার্যকর কর্মসূচিতে রূপ নেবে।
ছাত্র ও যুবসমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, শহীদ শরীফ ওসমান হাদি ছিলেন আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আপসহীন এক সাহসী কণ্ঠ। তাঁর আদর্শ ধারণ করে তরুণদের বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়াতে হবে এবং সাহসের সঙ্গে বলতে হবে—‘আমিই হাদি’।
তিনি বলেন, প্রকৃত তারুণ্য বয়সের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; মানসিক দৃঢ়তাই প্রকৃত শক্তি। সামান্য প্রতিবন্ধকতায় পিছু হটা মানে নেতৃত্বহীনতা। জামায়াতে ইসলামী এমন এক তারুণ্যের বাংলাদেশ গড়তে চায়, যারা অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে অবিচল থাকবে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস তুলে ধরে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ১৯৪৭ সালের পর থেকে এই ভূখণ্ড দীর্ঘ সময় শোষণ ও বৈষম্যের শিকার হয়েছে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল অস্বীকার করায় মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে। স্বাধীনতার পরও আজ পর্যন্ত একটি প্রকৃত ইনসাফভিত্তিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশে একটি ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা চলমান ছিল, যেখানে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের পাশাপাশি সাধারণ জনগণও নিপীড়নের শিকার হয়েছে। কোটা সংস্কারের ন্যায্য দাবিকে দমন করার চেষ্টাই সর্বশেষ গণ-অভ্যুত্থানের পথ তৈরি করেছে, যেখানে ছাত্র ও যুবসমাজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ছাত্র, যুবক ও শ্রমিকদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানান জামায়াত আমির। একই সঙ্গে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক প্রয়াত ওসমান হাদির আত্মত্যাগকে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব ও সংগ্রামের অনুপ্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, মানুষের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর সংগ্রাম ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়েরসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।