04/21/2025 খুলনা সিটিতে ভোটগ্রহণ শেষে গণনা চলছে
Mahbubur Rohman Polash
১৫ মে ২০১৮ ২০:২০
কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোট গণনা চলছে।
বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া উৎসাহ-উদ্দীপনা আর উৎসবমুখর পরিবেশে আজ সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে।
বাসস’র খুলনা অফিস জানায়, খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহান আলী এই তিনটি এলাকা খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মিল-কারখানা ও শ্রমিক অধ্যুষিত হওয়ায় এখানে ভোটাররা ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছে। নগরীর অন্যান্য এলাকার চেয়ে এখানে ভোটার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ইকবাল নগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, লবণছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাজি মালেক দারুলসুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা, এই তিনটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ অনিয়মের অভিযোগে স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দিনভর নির্বাচনে জালভোট দেয়া, এজেন্টদের বের করে দেয়াসহ নানা অভিযোগ করে আসছেন।
এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তাদের অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। সেখানকার নির্বাচন নিয়ে বিএনপির করা অভিযোগ সুনির্দিষ্ট নয় এবং দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপির অভিযোগ সুনির্দিষ্ট নয়। যাদেরকে বের করে দেয়া হয়েছে। তারা এজেন্ট কি না সেটাও দেখার বিষয়। পরিচয়পত্র না থাকলে তাদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়।
এই নির্বাচনে মেয়র এবং কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিলিয়ে মোট ১৯১ জন প্রার্থী নির্বাচনের চূড়ান্ত লড়াইয়ে মাঠে রয়েছেন। মেয়র প্রার্থী ৫ জন, ১৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৪৮ জন কাউন্সিলর এবং ১০টি সংরক্ষিত আসনে ৩৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
খুলনা সিটিতে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৬ ও নারী ২ লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন। ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রে ভোট কক্ষ ১ হাজার ১৭৮টি। প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার রয়েছে ৪ হাজার ৫৭২ জন।
এর আগে ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটার ছিল ৪ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৮জন। এর মধ্যে ২ লাখ ১৬ হাজার ৯৭ জন ছিল নারী ও ২ লাখ ২৪ হাজার ৪৭১ জন ছিল পুরুষ ভোটার। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোটার ছিল ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৩৯৮ জন।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনে প্রথমবারের মতো মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মেয়র পদে যে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা হলেন- আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক (নৌকা), বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির এসএম শফিকুর রহমান (লাঙল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অধ্যক্ষ মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক (হাত পাখা) এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির মিজানুর রহমান বাবু (কাস্তে)।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউনুচ আলী জানান, রোববার থেকে মাঠে ১৬ প্লাটুন বিজিবি মাঠে নামানো হয়েছে। নির্বাচনে সাড়ে ৯ হাজার পুলিশ, এপিবিএন, সাড়ে ৪ হাজার আনসার-ভিডিপি সদস্য, ৯শ’ অঙ্গীভুত আনসার-ভিডিপি সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি থাকবে র্যাবের ৩২টি টহল দল দায়িত্ব পালন করে। যার প্রতিটি দলে ৮ জন সদস্য ছিল। এছাড়া ৪টি স্টাইকিং ফোর্স টিম মাঠে রয়েছে। এ টিমে ১০ জন করে রয়েছেন।
নির্বাচনের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও সিটি নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা প্রতিপালনের লক্ষ্যে ৩১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে মাঠে নামানো হয়েছে। তারা কেন্দ্রভিত্তিক নিজ নিজ অধীক্ষেত্রে দায়িত্বে রয়েছেন। প্রত্যেক ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে একটি করে পুলিশের টিম রয়েছে। নির্বাচনে ৮টি মোটর সাইকেল টিম এবং ১১টি পিকেট টিম দায়িত্ব পালন করছেন।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দুটি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার হয়। নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ২০৬ নম্বর কেন্দ্র ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ২৩৯ নম্বর কেন্দ্রে মোট ১০টি ইভিএম ছিল।